তুলছেন না অভিভাবকরা, শিক্ষার্থীদের ১৪৪ কোটি টাকা যাচ্ছে কোষাগারে

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর

প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি হিসেবে টাকা দিচ্ছে সরকার। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তবে অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক না তোলায় সে টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হচ্ছে। এ টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪৪ কোটি, যার মধ্যে ৯১ কোটি টাকা ইতোমধ্যে জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি ৫৩ কোটি টাকাও দ্রুত জমা হবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে। 

সূত্র জানায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ শিশুকে উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় ‘প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্পের (তৃতীয় পর্যায়)’ এক কোটি ২১ লাখ পরিবার সুবিধাটি পাচ্ছে। প্রাথমিকের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাসে ১০০ টাকা এবং প্রাক-প্রাথমিকে মাসে ৫০ টাকা করে উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। উপবৃত্তির টাকা শিক্ষার্থীর অভিভাবকের শিওর ক্যাশ অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।

তবে অনেক অভিভাবক এ টাকা না তোলায় তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয় গত বছরের জুনে মাসে। মন্ত্রণালয় থেকে রূপালী ব্যাংককে চিঠি দিয়ে এ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য বলা হয়। এরপর রূপালী ব্যাংক ১৪৪ কোটি টাকার মধ্যে ৯১ কোটি টাকা গত জানুয়ারিতেজমা দিয়েছে। বাকি ৫৩ কোটি টাকা চলতি মার্চে জমা হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে অভিভাবকদের টাকা না তোলার কারন খুঁজে বের না করে তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ায় এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তারা বলছেন, অভিভাবকরা এ টাকা সঞ্চয়ও করতে পারেন। প্রকৃত কারণ না জেনে টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া ঠিক নয় বলেও তারা মনে করছেন।

প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ইউসুফ আলী এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেন, প্রচুর টাকা অ্যাকাউন্টে পড়ে আছে। বিষয়টি জানার পর টাকাগুলো রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত নিতে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রূপালী ব্যাংককে টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৯১ কোটি টাকা জমা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাকি ৫৩ কোটি টাকাও শিগগিরই জমা হবে।

জানা গেছে, অনেক অভিভাবক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার না করায় টাকা পড়ে আছে। আবার অনেকে টাকা তুলতেই আগ্রহী না। কিছু ক্ষেত্রে অভিভাবকের নাম-ঠিকানাও ঠিক নেই। ফলে এ ধররনের জটিলতা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতিরও অভিযোগ রয়েছে। তবে চলতি বছর থেকে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণে শিওর ক্যাশকে বাদ দিয়ে ‘নগদ’র মাধ্যমে বিতরণে করার চুক্তি হয়েছে।