মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের আত্মপ্রকাশ

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেওয়া হয়

শিক্ষার গুণগত মান ও পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে মাধ্যমিক স্তরের সব প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়ে ‘বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ’ নামে শিক্ষকদের নতুন একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ সংগঠনটির আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নতুন এ সংগঠনের আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব রাজধানীর মগবাজারে অবস্থিত বিটিসিএল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান বাবুল।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিদ্যমান কোনো শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে ১০ অক্টোবর ২০২০ সালে সেগুনবাগিচা হাইস্কুলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সারা বাংলাদেশের মাধ্যমিক স্তরের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় করা হয়। ওই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মাধ্যমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসনের লক্ষ্যে একটি সংগঠন করার সিদ্ধান্ত হয়।  

তিনি বলেন, মুজিব শতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ১০০ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। করোনার কারণে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। ইতোমধ্যে আমরা ৪০টির অধিক জেলা আহবায়ক কমিটি গঠন করেছি। সাংগঠনিক কার্যক্রমের সঙ্গে আমাদের দাবি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। আমরা নির্যাতিত প্রধান শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়েছি। অনেক ক্ষেত্রে সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হয়েছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতির পথে।

মুজিবুর রহমান তার লিখিত বক্তব্যে নবগঠিত এ সংগঠনের ১৪টি লক্ষ্য ও ১৩টি দাবি তুলে ধরে বলেন, আমাদের মূল দাবি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষদের মতো মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন গ্রেড ছয়-এ উন্নীতকরণ।

এছাড়া অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- শতভাগ উৎসব ভাতা, বিধি মোতাবেক বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা দেওয়া। শিক্ষা প্রশাসনে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের শতকরা ৩০ শতাংশ প্রেষণে পদায়নের ব্যবস্থা করা। আইএলও ও ইউনেস্কোর সুপারিশ অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটির সংস্কার করা। মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক পদে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তির পদায়নের ব্যবস্থা করা। জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে শিক্ষক কর্মচারীদের বদলির ব্যবস্থা নিশ্চিত করণ। শিক্ষকদের চাকরিকালীন পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। সহকারী শিক্ষক/কর্মচারীদের মতো প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের দু’টি উচ্চতর স্কেলের ব্যবস্থা করা। দাখিল মাদরাসার সুপাররা যেভাবে আলীম মাদরাসার অধ্যক্ষ হতে পারেন তেমনিভাবে প্রধান শিক্ষকরা যেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হতে পারেন তার ব্যবস্থা নেওয়া। সাময়িক বরখাস্তকৃত শিক্ষক/কর্মচারীদের ইএফটি অন্তর্ভুক্তিকরণ। শিক্ষক-কর্মচারীদের সাময়িক বরখাস্তকালীন গঠিত তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষতার স্বার্থে জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক/উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি চাই, যেখানে বিদ্যমান ম্যানেজিং কমিটির কোনো সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে না এবং মাধ্যমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে সব বৈষম্য নিরসনের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করতে হবে।

সংগঠনের আহবায়ক নৃপেন্দ্র চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- যুগ্ম আহবায়ক দুলাল চন্দ্র চৌধুরী, মোহাম্মদ শফিউদ্দিন, আলতাফ হোসেন নাজির, মো. শাহাবুদ্দিন মোল্লা, এইচ এম আব্দুল মোমিন, মাসুম বিল্লাহ, মহিউদ্দিন আল মামুন, মো. নুরুজ্জামানসহ দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধান।