জবির ছাত্রী হলের সীমানায় রিকশা স্ট্যান্ড, অবাধে মাদক সেবন

ছাত্রী হলের সামানের জায়গায় রিকশার সারি
রিকশার দখলে জগন্নাথ হলের ছাত্রী হলের সামানের জায়গা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হল গত বছরের ২০ অক্টোবর উদ্বোধন করা হয়েছে। তবে এখনও অরক্ষিত রয়েছে এর সীমানা। ফলে হলের সীমানা ঘেষেই গড়ে উঠেছে যত্রতত্র ভ্যান-রিকশার স্ট্যান্ড। সেই সাথে ওই স্থানে চলছে প্রকাশ্যে মাদকের ব্যবহারও। সকাল থেকে শুরু করে বিকাল পর্যন্ত রিকশার সংখ্যা কম থাকলেও সন্ধ্যার পরপরই হলের এরিয়া পরিপূর্ণ হয়ে যায় রিকশা ও ভ্যানে। সঙ্গে চলে মাদক সেবনও।

একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ওই পথে যাতায়াতকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীসহপথচারীদেরকে অনেক বাজে মন্তব্য করেন রিকশা-ভ্যানে অবস্থানকারীরা। সরেজমিনে গিয়েও এসব বিষয়ের সত্যতা মেলে। দেখা যায়, ছাত্রী হলের গেটের সামনে থেকে শুরু ভিতরের সম্পূর্ণ জায়গা দখলে রয়েছে ভ্যান-রিকশার। এতে মাঝে মাঝে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে ওই পথে যাতায়াতকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীসহ পথচারীদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের  একদল শিক্ষার্থী বলেন, ‘করোনার কারণে আমরা এতদিন বাড়িতে ছিলাম। ঢাকায় এসে কৌতুহলবশত পাঁচ জন বান্ধবী হল দেখতে আসি। কিন্তু হল দেখতে এসে আমরা পড়ে যাই এক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। কারণ হলের গেটের সামনে ভ্যান-রিকশায় বসে থাকা লোকগুলো আড্ডা দিচ্ছিল এবং সিগারেট খাচ্ছিলো। এ অবস্থা দেখে আমরা আর ভেতরে প্রবেশ না করে দূর থেকে দেখেই ফিরে চলে আসি। আমরা চাই হল খোলার আগেই যেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এগুলো উচ্ছেদ করে দেয়।’

একই পথে বাংলাবাজার সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হওয়ায় যাতায়াতে সমস্যায় পড়তে হয় শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদেরও। এক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মেয়ে বাংলাবাজার সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস নাইনে পড়ে। সেজন্য এ পথেই আমাদের যাতায়াত করতে হয়। জানুয়ারি মাসে আমরা গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম বেড়াতে। গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসে বই নিতে আসলাম। কিন্তু গেটের সামনে এমন অবস্থা দীর্ঘদিনের।’

তিনি বলেন, ‘করোনায় দীর্ঘ বন্ধে ভেবেছিলাম, এই স্ট্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উচ্ছেদ করে দিয়েছে, যেহুতু এটা তাদের ছাত্রী হলের এরিয়ার মধ্যে পড়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন পরে এসে দেখি একই অবস্থা। স্কুলের যাতায়াত মুখে এই ভ্যান-রিকশার স্ট্যান্ড হওয়ায় আমাদেরও  নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমার বাসা কাছেই। তবুও মেয়েকে তো একা ছাড়তে ভয় করে এদের জন্য।’

এ বিষয়ে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এস. এম আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমাদের পুরান ঢাকায় জায়গা স্বল্পতা তীব্র । ফলে যে যেখানে ফাঁকা জায়গা পায়, সে সেই জায়গাটুকু যত্রতত্রভাবে ব্যবহার শুরু করে দেয়। তবে প্রকল্প আমাদের এখনও হল হ্যান্ডওভার করেনি। হল চালু হওয়ার আগেই আমরা সমস্যাটির সমাধান করবো।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ছাত্রী হলের সীমানায় যত্রতত্র রিকশা-ভ্যান রাখা এবং সেখানকার অনৈতিক কাজ-কর্ম সম্পর্কে প্রশাসন অবগত নয়। তবে ছাত্রী হলের এরিয়াটা সূত্রাপুর থানার আয়ত্ত্বে। আমি অতি দ্রুতই সূত্রাপুর থানার দ্বায়িত্বরত অফিসারের সাথে কথা বলে ভ্যান-রিকশা স্ট্যান্ড সরানোর ব্যবস্থা করবো। পরবর্তীতে আর সমস্যা হবে না।’