মাধ্যমিকে অ্যাসাইনমেন্ট ভালো করার ছয় উপায়

মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা
মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা

করোনাভাইরাস সংক্রমণে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রাখতে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এ সিলেবাসের আলোকে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হচ্ছে। ৬ সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের এসব অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে।

এদিকে বাসায় বসে শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করে সেগুলো স্কুলে জমা দেবে। তবে অ্যাসাইনমেন্টের এই ধারণা স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছে একেবারেই নতুন। একটি ভালো অ্যাসাইনমেন্ট লেখার জন্য অনেক শিক্ষার্থী এখন গলদঘর্ম হচ্ছে। ভালো অ্যাসাইনমেন্ট তৈরির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। সেগুলো অনুসরণ করলে একজন শিক্ষার্থী ভালো করতে পারবেন। শিক্ষার্থীদের জন্য নিচে তার পাঁচটি উপায় তুলে ধরা হলো: 

সৃজনশীলতা

যে অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করা হচ্ছে সেখানে যাতে শিক্ষার্থীদের মৌলিক চিন্তা এবং সৃজনশীলতার ছাপ থাকে। অন্যের লেখা থেকে কপি করলে সেখানে কাঙ্ক্ষিত মূল্যায়ন পাওয়া সম্ভব নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি সৃজনশীলতা বাড়াতে চায় তাহলে পাঠ্যবইয়ের প্রতি ভালো করে মনোযোগ দিতে হবে। পাঠ্যবই বুঝে পড়তে হবে। এতে তাদের সৃজনশীলতা বাড়বে। নোট বা গাইড উপর নির্ভর করলে সৃজনশীলতা তৈরি হয়না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে নোট বই, গাইড বই, বা অন্য কারো লেখা নকল করে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিলে তা বাতিল হবে এবং পুনরায় সে অ্যাসাইনমেন্ট জামা দিতে হবে।

লেখায় তথ্য ও সূত্র উল্লেখ করা

যে বিষয়ের উপর অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করা হবে সে সংক্রান্ত তথ্য এবং সূত্র যাতে সঠিক হয় সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। শিক্ষকরা বলছেন, এক্ষেত্রে পাঠ্যবই হচ্ছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে নির্ভুল তথ্য এবং যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা একটি ভালো অ্যাসাইনমেন্টের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অ্যাসাইনমেন্টে যদি তথ্য ভুল থাকে তাহলে সেটির মূল্যায়ন খারাপ হতে বাধ্য।

গুছিয়ে লেখা

নবম শ্রেণীর একটি অ্যাসাইনমেন্ট হচ্ছে ‘একজন দেশপ্রেমিক নাগরিকের দশটি গুণ ১০ বাক্যে প্রকাশ করো’। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এ অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করতে হলে দেশপ্রেমের বিষয়টি উল্লেখ করতে। অর্থাৎ দেশপ্রেম বলতে কী বুঝায়?

শিক্ষকরা বলছেন, বাক্যগুলো এমনভাবে লিখেতে হবে যাতে একটি বাক্যে একটি ভাব প্রকাশিত হয়। বাক্য গঠন এবং বানান যাতে শুদ্ধ হয় সে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে।

সুন্দর হাতের লেখা

শিক্ষকরা বলছেন, অ্যাসাইনমেন্টে ভালো নম্বর পেতে হলে হাতের লেখা সুন্দর হবার কোন বিকল্প নেই। মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী হাতে লিখে অ্যাসাইনমেন্ট স্কুলে জমা দিতে হবে। শিক্ষার্থীর হাতে লেখা যদি ভালো না হয় তাহলে সেটি শিক্ষকের মনে বিরক্তির উদ্রেক করতে পারে। সেজন্য হাতের লেখা ভালো হলে সেখানে শিক্ষকদের সুনজর থাকে।

যেহেতু অ্যাসাইনমেন্ট বাড়িতে বসে তৈরি করা হচ্ছে, এবং পরীক্ষার হলের মতো এখানে সময়ের কোন বাধ্যবাধকতা নেই, সেজন্য শিক্ষার্থীরা চাইলে সহজে তাদের হাতের লেখা সুন্দর করে অ্যাসাইনমেন্ট উপস্থাপন করতে পারেন।

উপস্থাপনায় বৈচিত্র্য

যে অ্যাসাইনমেন্ট উপস্থাপন করা হচ্ছে সেখানে বৈচিত্র্য থাকা জরুরি। রংপুরের বীর উত্তম শহীদ সামাদ স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক আশরাফ আলী বলেন, সাদামাটা-ভাবে উপস্থাপন করার চেয়ে উদাহরণ দিয়ে উপস্থাপন করতে পারলে উপস্থাপনায় বৈচিত্র্য আসে।

 

সূত্র: বিবিসি বাংলা