গেছো শামুকের কৃত্রিম প্রজননে রাবি অধ্যাপকের সাফল্য

‘প্রকৃতির মুক্তা’ খ্যাত গেছো শামুকের কৃত্রিম প্রজননে সাফল্য পেয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদল। তাদের দাবি এটাই বিশ্বের প্রথম গেছো শামুকের কৃত্রিম প্রজনন সফলতা। এতে বিলুপ্তির পথে থাকা এই শামুক সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে, উপকৃত হবে প্রাণ-প্রকৃতি। এ বছরের মার্চে শামুকটি নিয়ে গবেষণা শুরু হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহরিয়ার শোভনের হাত ধরে।

গবেষক ও গবেষণা সহকারি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ হিল কাফি ও রুপময় তংচঙ্গা নামের দুই শিক্ষার্থী রাজশাহী ও পার্বত্য চট্টগ্রামের দুইটি জায়গা থেকে দুইটি গেছো শামুক সংগ্রহ করেন। গবেষনা শুরুর ৯ মাসের পরিশ্রমে এই সফলতা অর্জন হলো বলে জানান অধ্যাপক শোভন।

শামুকটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজশাহীর শামুকটি দিয়ে প্রজনন সফলতা পাওয়া গেছে। ৫ টি বাচ্চা পেয়েছি আমরা। শামুকটির আদি নিবাস আমেরিকার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য। যেটি লিগ্যাস প্রজাতির হতে পারে বলে ধারণা তার।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হারিয়ে যেতে বসেছিল শামুকটি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশী শামুকের উপর একটি সার্ভেতে দেখতে পেলাম এ শামুক খুবই দূর্লভ প্রকৃতির। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও উত্তরাঞ্চলের কিছু জায়গায় আছে। দু বছর ধরে খুজছিলাম তবে কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খুজে খুজে পেয়েছি। জলবায়ু পরিবর্তনের মূলত হারিয়ে যেতে বসেছে এই শামুকগুলো।’

মূলত দেশের জীব বৈচিত্র সংরক্ষণের ২০১৮ থেকে চলা প্রকল্পের একটা অংশ হিসেবে এই শামুক সংরক্ষণে এগিয়ে এসেছেন তিনি ও তার গবেষকদল। অধ্যাপক শোভনের জাপানের কয়েকজন গবেষক বন্ধুর সাথে দুই বছর ধরে এই গবেষণা প্রকল্পের সাথে যুক্ত থেকে গবেষণা করছেন।

তবে কেনো এ শামুক সংরক্ষণ প্রয়োজন? বা কি উপকার করে এরা? এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক শোভন বলেন, উদ্ভিদের গায়ে কিছু ক্ষতিকর অনুজীব লেগে থাকে। সেগুলো খেয়ে উদ্ভিদকে রক্ষা করে এই শামুক।

এর আগে হাওয়াইতে ডেভিসসিসকো নামের একজন গবেষক সাধারণ শামুকের কৃত্রিম প্রজননে সফলতা পান। সে হিসেবে গেছো শামুকের কৃত্রিম প্রজননে এটাই প্রথম সফল গবেষণা যা আলোর মুখ দেখলো।