ঢাবি ছাত্রের উপর হামলা-মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

হামলা
মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা

সিরাজগঞ্জে উল্লাপাড়া উপজেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর পরিবারের দুইটি গরু চুরি করে উল্টো ওই শিক্ষার্থীর উপর হামলা ও মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। বুধবার (২৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা জানান, গত ১১ নভেম্বর রাতে উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়নের গয়হাট্টা খোসালপুরে ঢাবির দর্শন বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী মারুফ তালুকদারের পরিবারের দুটি গরু চুরি হয়। এই ঘটনায় মারুফের বাবার নূর মোহাম্মদ তালুকদার উল্লাপাড়া থানায় সন্দেহভাজন কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করলে পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল আমিন সরকারের সমর্থক রমজান ও রাজু আলী গ্রেফতার হয়।

পরে ইউপি চেয়ারম্যান আল আমিন সরকার থানায় গিয়ে তাদের দুজনকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। ১৪ নভেম্বর মারুফের পরিবারের লোকজন মামলার আরেক আসামি চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই মুসলিম সরকারকে আটক করে পুলিশে দিতে গেলে চেয়ারম্যানের লোকেরা মারুফসহ তার পরিবারের উপর হামলা চালায়।

এতে মারুফসহ তার বড় ভাই মামুন তালুকদার ও চাচাতো ভাই রাজু তালুকদার গুরুতর আহত হন।
পরে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এদিকে এই হামলার পর মারুফের বাবা বাদী হয়ে আদালতের মাধ্যমে চেয়ারম্যান আল আমিন সরকারসহ তার সমর্থক ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

অপরদিকে চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই মুসলিম সরকার বাদী হয়ে মারুফসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে আদালতের মাধ্যমে আরও একটি মামলা দায়ের করেন।

এবিষয়ে উল্লাপাড়া থানার ওসি দীপক কুমার দাস বলেন, ‘‘গরু চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রথমে মারুফের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছে। পরে ১৪ নভেম্বর এই ঘটনায় উভয় গ্রুপে সংঘর্ষে হলে তারা কোর্টের মাধ্যমে পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে। মামলার তদন্ত চলছে।’’

এবিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান আল আমিন সরকারকে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় জানার পর তিনি ফোন কেটে দেন। পরে এসএমএসসহ একাধিক কল করার হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

বুধবার মানববন্ধনে মারুফ তালুকদার বলেন, ‘‘চেয়ারম্যান আল আমিন সরকার আমার ফুফাতো ভাই। আমার বাবা তার কাছে তিন লাখ টাকা পান। ওই টাকা চাইতে গেলে এর আগেও আমাকে মারধর করা হয়। পরে পরিকল্পিতভাবে চেয়ারম্যান তার লোকজনকে দিয়ে আমাদের দুইটি গরু চুরি করেছে। দুইজন চোর গ্রেফতার হলে চেয়ারম্যান নিজে থানায় গিয়ে তাদের ছাড়িয়ে এনেছে। পরে মুসলিম সরকারকে দিয়ে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।’’

মারুফের এক সহপাঠী মুক্তার হোসাইন বলেন, ‘‘এই মহামারীর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমরা অনেকে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছি। কিন্তু এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার যে, সারা দেশে একের পর ঢাবি শিক্ষার্থীর উপর হামলা-মামলার খবর পাচ্ছি।

আমাদের সহপাঠী মারুফদের গরু চুরি করে উল্টো তাদের উপর হামলা ও মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’’