পর্তুগালে জরুরি অবস্থায় স্কুলবন্ধ, কঠিন বিধিনিষেধ

পর্তুগাল
পর্তুগালে জরুরি অবস্থা

আইবেরিয়ান পেনিনসুলায় অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি ছোট্ট দেশ পর্তুগাল। কয়েক বছর ধরে দেশটি অর্থনীতিকে শক্ত করে লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছে। এর মধ্যে মহামারীর হানা দেশটিকে থামিয়ে দিয়েছে। মার্চের সংক্রমণের শুরু থেকে কয়েক দফায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং চলতি নভেম্বর মাসে জারিকৃত জরুরি অবস্থা ২৪ নভেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।

উক্ত জরুরি অবস্থায় ১ ডিসেম্বর এবং ৮ ডিসেম্বর সরকারি ছুটির বিবেচনায় পূর্বের বিধিনিষেধের কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে।

শনিবার ২১ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তা বিস্তারিত বিধিনিষেধ তুলে ধরেন। সংক্রমণ অঞ্চলের ব্যাপকতা ভেদে পুরো দেশকে লাল, কমলা, হলুদ, সাদা চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কিছু বিধিনিষেধ পুরো দেশের জন্য আর কিছু বিধিনিষেধ নির্দিষ্ট অঞ্চল অনুযায়ী।

চারটি অঞ্চলে যেসব বিষয়ে সমানভাবে প্রযোজ্য যেমন- ইতোপূর্বে রাস্তা এবং পাবলিক প্লেসে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল; এখন কর্মক্ষেত্রে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এক মিউনিসিপ্যালিটি থেকে অন্য মিউনিসিপ্যালিটিতে যাতায়াত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ৩০ নভেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকবে। এ সময় সন্তানদের দেখাশুনার জন্য ইচ্ছে করলে সরকারি কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি গ্রহণ করা হবে এবং প্রাইভেট কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লে-অফ প্রদান করা হবে।

যেসব মিউনিসিপ্যালিটিতে প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যায় ২৪০ জনের বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, সেসব মিউনিসিপ্যালিটির ক্ষেত্রে রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ, বাধ্যতামূলক টেলিওয়ার্ক, দোকানপাট রাত ১০টা বন্ধ করতে হবে।

যেসব মিউনিসিপ্যালিটিতে প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যায় ৪৮০ জনের বেশি আক্রান্ত হচ্ছে সেসব মিউনিসিপ্যালিটির ক্ষেত্রে রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন ও পহেলা ডিসেম্বর এবং ৮ ডিসেম্বর সরকারি ছুটির দিনসহ দুপুর ১টা থেকে পরবর্তী দিন ভোর ৫টা পর্যন্ত রাস্তায় চলাচল নিষিদ্ধ এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী ওই জরুরি অবস্থা জারিকালীন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করার জন্য ১৫৫০ মিলিয়ন ইউরোর একটি সহযোগিতা তহবিল ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ৭৫০ মিলিয়ন ইউরো এবং ১৬০ মিলিয়ন ইউরোর অফেরতযোগ্য তহবিল ঘোষণা করেন।

প্রধানমন্ত্রী সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন- ধৈর্যসহকারে অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য; যাতে কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। যদি কোনো কারণে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বিপর্যস্ত হয়, তাহলে তা কাটিয়ে ওঠা খুবই কষ্টসাধ্য হবে এবং একটি অনাকাঙ্ক্ষিত জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।