শপথের মাত্র ৩ দিন পর বিহারের শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ

বিহার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী মেওয়ালাল চৌধুরি
বিহার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী মেওয়ালাল চৌধুরি

ভারতের বিহার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী মেওয়ালাল চৌধুরি শপথ নেওয়ার মাত্র ৩ দিন পর পদত্যাগ করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার পাটনায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র জমা দেন দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত মেওয়ালাল।

জামুই জেলার তারাপুর কেন্দ্রের দ্বিতীয় বারের জেডি (ইউ) বিধায়ক মেওয়ালাল গত সোমবার মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরই বিরোধী দলগুলো সরব হয়। 

২০০৫-২০১০ সালে ভাগলপুরের বিহার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন মেওয়ালাল। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিধি বহির্ভূতভাবে নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সে সময় মেওয়ালালের স্ত্রী নীতা তারাপুরের জেডি (ইউ) বিধায়ক ছিলেন।

২০১৫ সালে জেডি (ইউ)-র টিকিটে বিধানসভা ভোটে জয় পান মেওয়ালাল। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে প্রকাশ্যে আসে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ। 

তখন সরব হয় বিহারের তৎকালীন বিরোধী দল বিজেপি। প্রাথমিক তদন্তের পর তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ (৪০৯), জালিয়াতি (৪২০), অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র (১২০-বি)-সহ ভারতীয় দণ্ডিবিধির একাধিক ধারায় মামলাও করা হয়। 

সে সময় মেওয়ালালকে আটকের দাবিতে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপির পরিষদীয় নেতা সুশীল মোদি। নবনির্মীত বিহার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক কোটি টাকা ঘুষের বিনিময়ে একশ ৬৭ জন সহকারি অধ্যাপক, জুনিয়র সায়েন্টিস্ট এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগের সেই মামলায় মোট অভিযুক্তের সংখ্যা ছিল ৫০-এরও বেশি। 

সেই মামলার তদন্ত এখনো চলছে। মেওয়ালালের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তিরও অভিযোগ উঠেছিল। দুর্নীতির মামলা দায়ের হওয়ার পর তৎকালীন জেডি(ইউ) বিধায়ক মেওয়ালালকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন নীতীশ কুমার। 

সে সময় আটক এড়াতে মেওয়ালাল গা ঢাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বেশি দিন সেই শাস্তি বহাল থাকেনি। এবারের ভোটেও দলের টিকিট পেয়ে বিধায়ক হন মেওয়ালাল। ভোটে জিতে প্রথমবার মন্ত্রীও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তিন দিনের মাথায় নিজেই পদ ছেড়ে দিলেন।

মেওয়ালালের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার প্রসঙ্গ তুলে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বুধবার এক টুইট বার্তায় লেখেন, একজন পলাতক অপরাধীকে রাজ্যের মন্ত্রী করা হলো।

মেওয়ালাল অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তার দাবি, আমি নির্দোষ। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় মামলার কথা জানিয়েছি। পুলিশ এখনো আমার বিরুদ্ধে কোনো চার্জশিট জমা দিতে পারেনি।  যদিও শেষ পর্যন্ত তার এই ‘সাফাই’য়ে নীতীশ সন্তুষ্ট না হয়ে পদত্যাগের নির্দেশ দেন বলেই জেডি(ইউ) সূত্র জানিয়েছে।

 

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে