চলে গেলেন সেই সফল ফ্রিল্যান্সার ফাহিম
- ৩০ নভেম্বর -০০০১, ০০:০০
চলে গেলেন শারীরিক প্রতিবন্ধীতা জয় করে বাড়িতে বসে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করে স্বাবলম্বী হয়ে সাড়া জাগানো মাগুরার ফাহিম-উল করিম। বুধবার (১১ নভেম্বর) রাত পৌনে ১১ টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান বলে পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তার বাড়ি মাগুরা শহরের মোল্যা পাড়া এলাকায়। এর আগে বুধবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফরিদপুর নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, ডুচেনে মাসকিউলার ডিসট্রফি (ডিএমডি) রোগে ভুগছিলেন ফাহিম।
২২ বছর বয়সী ফাহিম বিরল এক রোগে গোটা শরীর অচল হয়ে যায়। সচল শুধু মাথা ও ডান হাতের দুটি আঙুল। এগুলোকে কাজে লাগিয়ে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনেন তিনি। শুধু তাই নয়, নিজের আয় দিয়ে মাগুরা শহরে জমি কিনে বাড়ি করে মা-বাবার আজীবনের স্বপ্ন পূরণ করেছেন।
এর আগে তার কাজে খুশি হয়ে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তাকে একটি ল্যাপটপ উপহার দিয়েছেন। ফাহিম প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে মেধার অদম্য শক্তি কাজে লাগিয়ে সফলতা অর্জন করেছেন। অনেক যুবকের জন্য তিনি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
ফাহিমের বাবা রেজাউল করিম একটি বেসরকারি কোম্পানির বিপণন কর্মী। তিনি জানান, মাগুরা শহরে ভাড়া বাসায় সন্তান, স্ত্রী, ফাহিমসহ দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি বসবাস করে আসছিলেন। টানাটানির সংসার হলেও ভালোই কাটছিল তাদের দিন। একমাত্র ছেলে ফাহিম ২০১২ সালে জেএসসি পরীক্ষার আগে হঠাৎ শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে।
তিনি আরও জানান, দৃঢ় মনোবল, প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও মেধা কাজে লাগিয়ে ফাহিম সফল ফ্রিল্যান্সার হন। কাজের দক্ষতার কারণে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ফ্রিল্যান্সার ফাহিম বিশ্বের ৩০ থেকে ৩৫টি দেশের কাজ করতেন। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করে গত চার বছর ধরে ফাহিম মাসে গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে আয় করেছেন। তার উপার্জনে পরিবারের সচ্ছলতা ফেরে। বোনের লেখাপড়া চলছিল।