ইতিবাচক কাজ করতে গেলে বাধা বেশি আসে: রাব্বানী

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী বলেছেন, মিথ্যা একটি অভিযোগ নিয়ে আমাকে ছাত্রলীগের পদ ছাড়তে হয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, আমার বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা অভিযোগটি প্রমাণ করতে পারেনি। এ বিষয়ে নেত্রীকে (প্রধানমন্ত্রী) ভুল বুঝানো হয়েছে বলে দাবি তার।

আজ শুক্রবার রাতে নেত্রকোনার কমলাকান্দা উপজেলায় আত্মহত্যা করা ছাত্রলীগ কর্মী মামুনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি। এসময় মামুনের পরিবার এক লাখ টাকার ঋণ পরিশোধ করেছে ‘টিম পজিটিভ বাংলাদেশ’। 

গোলাম রাব্বানী বলেন, সৎ থাকলে ভয়ের কোন কিছু নেই। আমি কখনও কোন অন্যায় করিনি। ছাত্রলীগের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে ডাকসুরও দায়িত্বে ছিলাম। কোনদিন একটা টাকাও হারামভাবে উপার্জন করিনি। এজন্য হয়তো কারও স্বার্থে আঘাত লেগেছে। ইতিবাচক কাজ করতে গেলে বেশি বাধা আসে বলে মন্তব্যে করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কমিটি নেই আজ ২৩ বছর! দুর্গম হাওর এলাকার নিন্মবিত্ত পরিবারের বড় সন্তান মামুন, একটা পরিচয়ের আশায় বছরের পর বছর ছাত্র রাজনীতি করতে করতে ঋণগ্রস্ত ও হতাশাগ্রস্ত মামুন, মানসিক চাপ থেকে চির মুক্তির পথ খুঁজে নিতে আত্মহত্যা করেছে। সারাদেশে এমন মানসিক চাপে আছে লাখো মামুন! এই দায় কার?

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী হয়ে কমলাকান্দা উপজেলা বিভিন্ন মিটিং মিছিল থেকে শুরু করে দলীয় বিভিন্ন কাজেই প্রতিনিয়ত অংশগ্রহণ করে আসছিলো আল মামুন। তবে পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় প্রতিনিয়তই হিমশিম খেতে হতো তাকে। পরিবারের বড় ছেলে হয়েও পরিবারের জন্য কোন কিছু করতে না পারায় প্রতিনিয়তই হতাশায় ভুগতো। স্থানীয়রা সব সময় মামুনকে সহায়তার পাশাপাশি মানসিক হতাশা কাটাতে পরামর্শ দিয়েছেন। পাঁচ সদস্যের পরিবার মামুনের। বাবা চায়ের দোকানদার এবং বোন গার্মেন্টস শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন।

মামুন নিজেও টিউশনি ও টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে পরিবারের দুবেলা দুমুঠো ভাত জোগাড়ের চেষ্টায় থাকতো সবসময়। গত দুই বছরে পরিবারের আর্থিক অবস্থা দিনে দিনে খারাপের দিকে যেতে থাকে। পরিবর্তী করুণ অবস্থা দেখে গত বছরের ডিসেম্বরের ১ তারিখ রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহেরা খাতুন নিজে প্রধানমন্ত্রী বরাবর মামুনের পরিবারের জন্য সাহায্যের আবেদন করেন।

সর্বশেষ গত ২৫ অক্টোবর আত্মহত্যার পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিবারের আর্থিক সংকট কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহায়তায় একটি পোস্ট করেন। এর পরপরই নিজ ঘরেই গলায় রশি বেঁধে আত্মহত্যা করেন এই ছাত্রলীগ কর্মী।