ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে চার বছরে ১১ কিশোরীকে ধর্ষণ

প্রতীকী ছবি

ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গত চার বছরে ১১ জন কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার একটি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নওরোজ হিরা সিকদারের বিরুদ্ধে।

এই |ঘটনায় বুধবার রাতে হিরাসহ দুজনকে আসামির বিরুদ্ধে বাকেরগঞ্জ থানায় মামলা করেছে নির্যাতনের শিকার এক কিশোরী। আর ১১ জনের পক্ষে আরেকটি ধর্ষণের অভিযোগ থানায় দায়ের করেছেন শেখ ইমরান হোসেন নামের স্থানীয় আরেক ব্যক্তি। অভিযুক্ত নওরোজ হিরা সিকদার বর্তমানে পলাতক।

অভিযুক্ত হিরা সিকদার উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ফরিদপুর গ্রামের আব্দুল খালেক সিকদারের ছেলে এবং স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত হিরা ১১টি মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। এদের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। শারীরিক সম্পর্কের সময় এসব মেয়ের অগোচরে হিরা তা মোবাইলে ধারণ করে। পরবর্তীতে ওই মোবাইলের ভিডিওচিত্র দেখিয়ে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় ভীতি দেখিয়ে তাদের আবারও ধর্ষণ করে আসছিল।

এদের মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ের পর তাদের শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ওই ভিডিওচিত্র দেখানোর ফলে তাদের তালাক দেওয়া হয়। এছাড়াও তার ধর্ষণের শিকার হয়েছে একই পরিবারের তিন বোন এবং আরেক পরিবারের দুই বোন। কিন্তু ভিডিওর জন্য তারা কারও কাছে কোনও অভিযোগ করতে পারেনি।

হিরার ঘনিষ্ঠ এক স্বজন নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানিয়েছেন, হিরা বিবাহিত। সে তার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতো। ওই সময় তার স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে হিরা এক ছেলেকে বলাৎকার করে। এ ঘটনা এলাকাবাসী দেখে ফেললে হিরার মাথার চুল থেকে শুরু করে ভ্রু পর্যন্ত ফেলে দিয়ে তাকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার পর হিরাকে তালাক দেয় তার স্ত্রী। এরপর থেকে হিরা গ্রামের বাড়িতে থাকা শুরু করে।

অভিযুক্ত হিরা যে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সেই কমিটির সভাপতি মীর মহিসন এ ঘটনা জেনে ভীষণ ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, আমি হিরা সিকদারের বিচার চাই। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলার বিষয়টি আমি জানি। আমরাও তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম মামলা দায়ের ও অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। হিরা সিকদারের বিরুদ্ধে আরও নারী নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। তাকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।