পৃথিবীর কোনো ভালো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নেয় না

কামরুল হাসান মামুন
কামরুল হাসান মামুন

প্রথমে উপাচার্যরা মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই ছাত্র ভর্তি করা হবে। পরপরই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার কথা জানানো হলো। আসলে ভর্তি পরীক্ষা শিক্ষকদের দুইটা পয়সা আয়ের একটা পথ। এইটা থেকে সরে আসা কঠিন।

ভর্তি পরীক্ষা আমাদের ডিনদের দায়িত্বের একটা বড় অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভর্তি পরীক্ষা না থাকা মানে তারা বেকার হয়ে যাওয়া। ভর্তি পরীক্ষা থেকে আয়ের টাকা দিয়ে কী করবে সেটা হয়ত অনেক শিক্ষক ঠিক করে ফেলেছিল। হঠাৎ ভর্তি পরীক্ষা হবে শুনে মাথায় বজ্রপাত নেমে আসার মত।

পৃথিবীর কোন ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ভর্তি করে? কোথাও না। শিক্ষক নিয়োগ ও ছাত্র ভর্তি এইটা প্রতিটা বিভাগের নিজস্ব ব্যাপার। ভর্তির ব্যাপারে শিক্ষকদের একটা বড় কমিটি থাকতে পারে। সেই কমিটিই ঠিক করবে তার বিভাগে কাদের ছাত্র হিসাবে ভর্তি করবে। ভর্তির জন্য দরখাস্ত আহবান করা যেতে পারে। ওই বিভাগে কেন পড়তে চায় সেই বিষয়ে ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে একটা রচনা আহবান করা যেতে পারে। স্কুল ও কলেজের তিনজন শিক্ষকের কাছ থেকে রেকমেন্ডেশন লেটার নেওয়া যেতে পারে। এসএসসি ও এইচএসসি রেজাল্ট চাইতে পারে। এইসব বিবেচনায় নিয়ে একটি প্রাথমিক নির্বাচন করা যেতে পারে। এই শর্টলিস্টেড ছাত্রদেরকেই কেবল ভাইভার জন্য ডাকা যেতে পারে (সেটা এখন জুম্-এ হতে পারে)!

ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্রদের অনেকের SAT এক্সাম দেওয়া থাকতে পারে। এই পরীক্ষার ফলাফল দিয়েও আমরা ছাত্র ভর্তি করতে পারি। আমাদের ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশন এন্ড রিসার্চ বা IER আছে। তাদের মাধ্যমে নিয়মিত বছরে তিনবার SAT-এর মত একটি এক্সামের ব্যবস্থা করতে পারি। সেই রেজাল্টও ভর্তির জন্য বিবেচনা করতে পারি।

মুদ্দা কথা হলো দেশবিদ্যালয়কে বিশ্ববিদ্যালয় বানাতে হলে আমাদেরকে আমাদের শিক্ষক নিয়োগ ও ছাত্র ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নতুন কিছু ভাবতে হবে।

লেখক: অধ্যাপক, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।