নোটিশের জবাব মেলেনি, রিট করতে চান না শতাব্দী

এইচএসসি পরীক্ষা
শতাব্দী রায়

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে গত ৮ অক্টোবর আইনজীবীর মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠায় শতাব্দী রায় নামে এক শিক্ষার্থী। নোটিশ পাঠানোর ছয়দিন পার হলেও এখনো কোনো মহল থেকে এর জবাব দেয়া হয়নি। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আদালতে রিট আবেদন করার কথা থাকলেও রিট আবেদন করতে চান না তিনি।

বুধবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে এ বিষয়ে জানতে শতাব্দী রায়ের বাবা অরূপ কুমারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ কথা জানান। যদিও এর আগে ওই শিক্ষার্থী আদালতে রিট আবেদন করবেন বলে জানিয়েছিলেন।

এ প্রসঙ্গে অরূপ কুমার বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্বিবেচনার দাবিতে যে নোটিশ দেয়া হয়েছিল, সেটির জবাব কোনো পক্ষই দেয়নি। আমি এবং আমাদের আইনজীবী শিহাব উদ্দিন আদালতে রিট করতে চাইলেও শতাব্দী রিট করতে চায় না। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি।

রিট না করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, নোটিশ পাঠানোর পর অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার মেয়েকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। বিষয়টি শতাব্দী জানার পর সে অনেক কান্নাকাটি করেছে। আমার মেয়ে এখন আতঙ্কে আছে। রিট করলে এর আরও খারাপ কথা শোনা লাগতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই সে আর রিট করতে চাচ্ছে না।

গত ৭ অক্টোবর চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করে সরকার। জেএসসি-এসএসসি পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণ করে পরীক্ষার্থীদের ফলাফল দেয়ার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য গত বৃহস্পতিবার সকালে রেজিস্ট্রি ডাক যোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে ফলাফল লিগ্যাল নোটিশ পাঠান শতাব্দী রায় নামের ওই এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তার পক্ষে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান।

এ প্রসঙ্গে আইনজীবী শিহাব উদ্দিন বলেন, শতাব্দী দুই বছর পরিশ্রম করেছে। সে টেস্ট পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। সরকার যে পদ্ধতিতে রেজাল্ট দিতে চেয়েছে সেখানে তার ফলাফল খারাপ হওয়ার একটি সম্ভাবনা রয়েছে। সেজন্য আমরা নোটিশ পাঠিয়েছি। তবে ফেসবুকে শতাব্দী কে নিয়ে অনেক বাজে মন্তব্য করায় শতাব্দী রিট করতে রাজি হচ্ছে না। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি।

নোটিশে বিবাদী করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, একই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এবং ৯টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে। তাদের আগামী ৩ দিনের মধ্যে এ দাবি মেনে নিতে বলা হয়েছে। তা না হলে এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, এইচএসসি পরীক্ষা না নিয়ে শুধু মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার গড় করে শিক্ষার্থীদের ফলাফল নির্ধারণ করা হলে একদিকে যেমন প্রস্তুতিহীন, অনিয়মিত, একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্যদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি হবে, তেমনি কোনো কারণে এসএসসি ও জেএসসিতে খারাপ ফলাফল করা পরিশ্রমী ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের যোগ্যতা ও প্রচেষ্টা প্রমাণে ব্যর্থ হবেন।

নোটিশে আরো বলা হয়, আগের কোনো পরীক্ষার ফলাফল গড় করে বর্তমানের কোনো পরীক্ষার ফলাফল নির্ধারণ করা বেআইনি ও জোরপূর্বক। আইনগতভাবে সরকারের দায়িত্বশীলরা এটি করতে পারেন না।