নুর-মামুনদের অভিযোগ তদন্তে সময় বাড়ল আরও ৭২ ঘন্টা

লোগো
নুর ও মামুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুনসহ সংগঠনের ৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণের সহযোগিতার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। মামলা দুটিতে অভিযোগ তোলা হয়েছে, অপহরণ, ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতা। এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও অভিযোগ করা হয়।

এদিকে, এই দুই মামলার মূল আসামি মামুনকে সংগঠন থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়ে বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল সংগঠনটি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময়সীমা ছিল ৪৮ ঘন্টা। তবে নির্ধারিত সময় পর আজ শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি। এজন্য আরও ৭২ ঘন্টা সময় বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আজ রাতে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় আহবায়ক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ রাশেদ খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তদন্ত কমিটির আবেদনের ভিত্তিতে আমরা আরও ৭২ ঘন্টা সময়সীমা বৃদ্ধি করেছি। আশা করি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আমরা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবো।

এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমরা অভিযোগকারী ও অভিযুক্তদের সাথে পরিপূর্ণভাবে যোগ করতে পারিনি। তাই কেন্দ্রীয় পরিষদের কাছে সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন করেছি। কেন্দ্রীয় পরিষদ আমাদের আবেদনের ভিত্তিতে ৭২ ঘন্টা সময় বৃদ্ধি করেন।

তিনি আরও বলেন, অভিযোগকারী আমাদেরকে শারীরিক সম্পর্কের যথাযথ তথ্য দিতে পারেনি। তবে মামলার ভিত্তিতে আমাদেরকে তদন্ত করতে বলেছেন তিনি। তাই আমরা আরেকটু সময় বাড়ানোর আবেদন করি, যাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে পারি।

এর আগে বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্টি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সুপারিশসহ ঘটনার বিস্তারিত তথ্য কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের নিকট প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুনকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হচ্ছে।

এই তদন্ত কমিটিতে ছিলেন রয়েছে, পরিষদের ঢাবি সভাপতি বিন ইয়ামিন ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক তারেক রহমান এবং রাফিয়া সুলতানা।

নুর-মামুনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কোতওয়ালী থানায় একটি করা হয়। তার আগে রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, সহায়তা ও হুমকির অভিযোগে এদের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় প্রথম মামলাটি করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ইসলামিক স্টাডিজ পড়ুয়া এক ছাত্রী ওই মামলা করেন। তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রী। লালবাগ থানার মামলার বর্ণনায় ওই ছাত্রী হাসান আল মামুনের সঙ্গে প্রেম ও প্রণয়ের কথা জানিয়ে বিয়ে নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ তুলেছেন।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক নাজমুল হাসান, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. নাজমুল হুদা ও মো. আবদুল্লাহ হিল বাকী। একই তরুণীর করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার মূল আসামি পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক নাজমুল হাসান।

আর তিন নম্বর আসামি নুরুল হক নুর। বাকিরা হলেন আহবায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহবায়ক মো. সাইফুল ইসলাম, মো. নাজমুল হুদা ও মো. আবদুল্লাহ হিল বাকী।

মামলায় বিবরণে বলা হয়েছে, কোতোওয়ালি এলাকার সদরঘাট হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে এ ঘটনা ঘটেছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টা ৪০ থেকে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে ঘটনার তারিখ ও সময় উল্লেখ করা হয়েছে।