ঢাবির বিতার্কিক জাকারিয়ার মৃত্যু, মানতে পারছেন না কেউই

ঢাবি ছাত্রের মৃত্যু
জাকারিয়া বিন হক

‌‘‘তোর মত প্রাণবন্ত মানুষ এত সহজে জীবনের ইতি টানলি! এক সাথে ডিবেট করা, জিয়া হলের টিভি রুমের হৈচৈ! কত হাসিখুশি থাকতি। তুই এ কাজ করলি! আত্মহনন সমাধান নয়।’’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র জাকারিয়া বিন হক শুভর মৃত্যু নিয়ে এভাবেই স্ট্যাটাস দিয়েছেন ইসমাইল ভুইয়া নামে আরেক সাবেক শিক্ষার্থী। শুধু ইসমাইল নয়, জাকারিয়ার মৃত্যু যেন যেন সতীর্থদের কেউই মেনে নিতে পারছেন না। তাদের বক্তব্য, সবদিক থেকে মানসিকভাবে জোড়ালো জাকরিয়া শুভ। আত্মহত্যা করার মত ছেলে সে নয়।

কষ্ট পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীও। তার ভাষ্য, গত দুইদিনে আমরা আমাদের দুজন শিক্ষার্থীকে হারিয়েছি। বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। শিক্ষার্থীরা কেন এ ধরনের পথ বেছে নিচ্ছে সেটি বোধগম্য হচ্ছে না। আর কোনো শিক্ষার্থী যেন এমন পদক্ষেপ না নেয় আমরা তাদের সেই আহবান জানাই।

জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জাকারিয়া। লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ সরকারি করিম উদ্দিন কলেজের সাবেক শিক্ষক প্রয়াত আব্দুল হকের ছেলের তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ডিবেটিং ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জাকারিয়া।

বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে রাজধানীর তাজমহল রোডের বাসা থেকে আজ তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বর্তমানে তার লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

শুভর বন্ধুরা জানান, সে খুব স্ট্রং পার্সনালিটির মানুষ। ভালো ডিবেটর ছিল। শোনা যাচ্ছে, স্ত্রীর সঙ্গে সিগারেট খাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে। কিন্তু আসল ঘটনা কী, তা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। পুরো বিষয়টিকে আপাতত হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে তাদের। তাছাড়া হাসপাতালে শুভর মরদেহের কাছে স্ত্রী কিংবা শাশুড়ির না যাওয়াটাও ভিন্ন কিছু প্রমাণ করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষে জাকারিয়া বিন হক শুভ ওয়ালটন মোবাইল সেক্টর গাজীপুর জোনের ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কে কর্মরত ছিলেন। সদা হাস্যেজ্জ্বল এই শুভ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও নিজ এলাকায় বিভিন্ন সেবামুলক কর্মকান্ডসহ সাহিত্য, সংস্কৃতি সম্পর্কিত যাবতীয় কর্মকান্ডে জড়িতে ছিলেন।

শুভ’র শাশুড়ি দাবি করেছেন, স্ত্রী নীরার সাথে সিগারেট খাওয়া নিয়ে কথাকাটির জেরে সে ফ্যানের সাথে ওড়না ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে তার স্ত্রী গিয়ে ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে তা নামিয়ে ফেলে। পরে পুলিশে খবর দিলে লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে পাঠানো হয়।