চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে চান খালেদা জিয়া

বেগম খালেদা জিয়া

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রয়োজন হলে হাঁটুর চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে চান। এজন্য তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হবে। কারণ এই করোনায় তার কোনো ‘অ্যাডভান্স’ চিকিৎসা হয়নি বলে তার চিকিৎসক, আইনজীবী এবং দলীয় নেতারা জানিয়েছেন।

এর আগে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে গত ২৫ মার্চ সরকার তাকে নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়। তার এই মুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর।

কিন্তু খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, ‘‘মুক্তির সময় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যেমন ছিলো তেমনই আছে। কোনো উন্নতি হয়নি। করোনার কারণে তিনি মুক্তির পর শুরুতে আইসোলেশনে ছিলেন। এখন তার চিকিৎসকেরা মাঝে মধ্যে বাসায় গিয়ে তাকে দেখছেন। কিন্তু তাকে বিএসএমইউর চিকিৎসকেরা যে পরামর্শ দিয়েছেন তা শুরু সম্ভব হয়নি করোনার কারণে।’’

করোনা এখনো চলমান। কবে শেষ হবে ঠিক নেই। আর এই পরিস্থিতিতে তার পুরো চিকিৎসা শুরুও সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি। তার মতে অ্যাডভান্স চিকিৎসার জন্য অ্যাডভান্স সেন্টার দরকার। সেটা দেশে ও হতে পারে, বিদেশেও হতে পারে।

দুই সপ্তাহ আগে খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি জানান, ‘‘খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। আর তার হাঁটুর চিকিৎসাটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ। সেই চিকিৎসা দেশে সম্ভব না হলে তিনি দেশের বাইরে যেতে চান। তিনি দেশেই চিকিৎসা করাতে চান। কিন্তু যেহেতু তার হাঁটুর চিকিৎসা আগে দেশের বাইরে হয়েছে তাই এক সপ্তাহের জন্য দেশের বাইরে যেতে পারেন।’’

আর এখন যেহেতু করোনার কারণে তার চিকিৎসা শুরু সম্ভব হচ্ছে না। তাই মুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরকারের কাছে মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হবে বলে জানান মাহবুব উদ্দিন খোকন।

একই কথা বলেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি জানান, সময় মতো আবেদন করা হবে। আর তার চিকিৎসার জন্যই মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো প্রয়োজন।

কিন্তু দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম মনে করেন, ‘‘সরকার বিষয়টি আদালতকে জানালে ভালো হতো। সরকার নির্বাহী সিদ্ধান্তে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছে। কিন্তু তিনি দুদকের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত। সরকার তাকে মুক্তি দেয়ায় আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেছে। আইনে আদালতকে অবহিত করার একটি বিধান আছে। তার যদি মুক্তির মেয়াদ সরকার আবার বাড়ায় তাতে আমাদের আপত্তি নেই, খালেদা জিয়ার প্রতি আমাদের কোনো বিরাগ নাই।’’ তবে সেটা আদালতকে জানিয়ে করলে ভালো হয় বলে মনে করেন তিনি।

আর আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি। তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানের জন্য কোনো আবেদনও করা হয়নি। যখন আবেদন করা হবে তখন আমরা দেখব।’’

চিকিৎসকেরা জানান খালেদা জিয়ার হাত ও পায়ের সমস্যা আগের মতই আছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। বিএসএমএমইউর প্রতিবেদনেও তার একই সমস্যার কথা বলা হয়েছে। তিনি নিজে থেকে চলাফেরা করতে পারেন না। এমনকি পানিও নিজে উঠে খেতে পারেন না বলে চিকিৎসকরা জানান। খালেদা জিয়ার পরিবারে সদস্যরা তাই এখন দেশের বাইরেই তার চিকিৎসা চান। [সূত্র: ডয়চে ভেলে]