ব্যতিক্রমী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতী

মো. সাইদুর রহমান

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত শান্তিনিকেতন যা ভরতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের নিকটে অবস্থিত একটি প্রাচীন আশ্রম ও শিক্ষাকেন্দ্র। ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বোলপুর শহরের উত্তর-পশ্চিমাংশে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।

পরে তাকে কেন্দ্র করে ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন, যা কালক্রমে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেয়। ১৯১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিশ্বভারতীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এরপর ১৯২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর (১৩২৮ বঙ্গাব্দের ৮ পৌষ) গুরুদেব রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতিতে আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল বিশ্বভারতীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জীবনের দ্বিতীয়ার্ধের অধিকাংশ সময়ই শান্তিনিকেতন আশ্রমেই অতিবাহিত করেছিলেন। তার সাহিত্য ও সৃষ্টিকর্মে এই আশ্রম ও আশ্রম-সংলগ্ন প্রাকৃতিক পরিবেশের উপস্থিতি সমুজ্জ্বল ও দৃষ্টান্তমূলক ঘটনাবলী। শান্তিনিকেতন চত্বরে নিজের ও অন্যান্য আশ্রমিকদের বসবাসের জন্য গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধিক সৌন্দর্যমণ্ডিত ভবন নির্মাণ করিয়েছিলেন।

পরবর্তীকালে আশ্রমনিবাসী বিভিন্ন শিল্পী ও ভাস্করের সৃষ্টিকর্মে সুসজ্জিত হয়ে এই আশ্রমটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হয়ে ওঠে। যার ফলে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পর্যটক শান্তিনিকেতন ভ্রমণ করেন। ১৯৫১ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে।

এখানকার উল্লেখকৃত স্থানগুলো হল- শান্তিনিকেতন গৃহ, উপাসনা গৃহ বা ব্রাহ্ম মন্দির, ছাতিমতলা, আম্রকুঞ্জ, সিংহ সদন, ঘন্টাতলা, গৌরপ্রাঙ্গন ও উন্মুক্ত মঞ্চ, পাশেই পাঠভবনের কার্যালয়, আশ্রম মাঠ (বর্তমানে যেখানে বসন্তউৎসব হয়), ব্লাক হাউজ (কালো বাড়ী), বাংলাদেশ ভবন, সঙ্গীত ভবন, কলাভবন, পল্লী শিক্ষা ভবন ও পল্লী শিক্ষা বিভাগ, নাট্যঘর, উত্তরায়ন (সংগ্রহশালা), গুরুদেবের পাঁচটি বাড়ী- উদয়ন, কোণার্ক, পুনশ্চ, শ্যামলী ও উদীচী।