সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন ক্লাস শুরু করছে খুবি

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসারে পহেলা জুলাই থেকে দ্বিতীয় টার্ম শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রথম টার্মের ক্লাস-পরীক্ষা অসমাপ্ত রয়েছে। এ অবস্থায় আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয়টার্মের ক্লাস অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে অনলাইন মিটিংয়ের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে অনলাইনে ক্লাস শুরু হলেও পরীক্ষাগুলোর বিষয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ, বিভিন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধানবৃন্দ, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক, প্রভেস্টবৃন্দ, আইকিউএসির পরিচালক, আইসিটিসেলের পরিচালক, শিক্ষক সমিতির সভাপতি, জনসংযাগ ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) যুক্ত ছিলেন।

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, বর্তমান করানা মহামারী পরিস্থিতিতে শিক্ষা সেক্টর স্থবির হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা মানসিকভাবেও উৎকণ্ঠায় রয়েছে। সরকার এবং ইউজিসি উদ্ভুত সমস্যা সমাধানে নানাভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। শিগগির কিছু নির্দেশনা বা গাইড লাইন পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্ব-প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগ এখানে বিশেষ গুরুত্ব রাখে। সে বিবেচনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস চালুর ব্যাপারে ইতোমধ্যে গত দুই মাস ধরে বিভিন্ন জরিপ ও সুবিধা-অসুবিধা নিরুপনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদর ইটারনেট, বিদ্যুৎ সুবিধার বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের কাজ প্রায় সম্পন হয়েছে। এসব বিষয়ে দুইটি কমিটি কাজ করছে এবং তাদের নিকট থেকেও বেশ কিছু তথ্য আসছে, সুপারিশ ও পাওয়া যাবে। আমরা শিক্ষার্থীদের সুবিধা অসুবিধাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে তা সমাধানের চেষ্টা করছি। একই সাথে তারা যাতে অনলাইনে হলেও শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে সেটাই আমাদের এখন মূখ্য চিন্তা। শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে সার্বিক সুবিধার দিক নিয়েও কাজ চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, চলতি জুলাই থেকে আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে যেসব ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) প্রথম টার্মের কোর্স (তত্ত্বীয়) কিছু অংশ এখনও বাকি আছে তা সম্পন্ন করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। শিক্ষার্থীদর জন্য সহজভাবে অনলাইন কোর্স রেজিস্ট্রেশন এবং যেসব ক্ষেত্রে থিসিস জমা হয়েছে সেসব ক্ষেত্রে অনলাইন ডিফেন্স গ্রহণের বিষয় নিয়েও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।

আপদকালীন করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন একাডেমিক কার্যক্রম চালু করতে বিদ্যমান একাডেমিক অর্ডিন্যান্স কোন ধারার পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে তা একাডেমিক কাউন্সিলে জরুরী সভা আহবান করে সেখানে উপস্থাপন করা হবে। একাডেমিক ও প্রশাসনিক সংক্রান্ত এমন আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক প্রধানরা সভায় একমত হন।

বর্তমান করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে একাডেমিক কার্যক্রম অনেকটা সচল রেখে শিক্ষায় ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের জীবনের মূল্যবান সময় কাজে লাগানোর জন্য তাদেরকে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে উৎসাহিত করার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়।

আগ্রহী শিক্ষকদের বিনা সুদে ল্যাপটপ ক্রয় ও ঋণ সুবিধা ঘোষণার জন্য উপাচার্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো হয়। অনলাইন একাডেমিক কার্যক্রম চালু করতে উদ্ভুত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিক্ষকবৃন্দ প্রস্তুত বলেও সভায় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সভায় অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে শিক্ষকদের জন্য স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।