পিইসি জেএসসি নয়, বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে পদোন্নতির প্রস্তাব

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আপাতত ঈদ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে বলে এক অনুষ্ঠানে ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।

ফলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। এ অবস্থায় পিইসি এবং জেএসসি ছাড়াই শুধুমাত্র বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পদোন্নতির প্রস্তাব করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রতি বছর নভেম্বর মাসের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী-পিইসি ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী-জেএসসি পরীক্ষা। কিন্তু দুই মাসেরও অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সংসদ টেলিভিশনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ক্লাস প্রচার করলেও তা খুব একটা কাজে আসছে না। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা খুব একটা এগোচ্ছে না। এ অবস্থায় সিলেবাস শেষ করা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। তাই তাদের দাবি দাবি শুধু বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পদোন্নতি দেয়া হোক।

এ বিষয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও ব্যবসায় স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ আফতাব উদ্দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত বাতিল করা দরকার। কেননা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে তবে শিক্ষার্থীদের পিইসি এবং জেএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার তেমন সুযোগ থাকবে না। অন্যদিকে এ পরীক্ষাগুলোর সাথে এক কোটির বেশি শিক্ষার্থী এবং তাদের শিক্ষক, অভিভাবক জড়িত আছেন। করোনা পরিস্থিতিতে সকলেই অনিশ্চয়তায় মধ্যে রয়েছেন। এমন দ্রুত একটি ঘোষণা সকলকেই মানসিক স্বস্তি দিতে পারে বলে জানান তারা।

তিনি আরো লেখেনে, দীর্ঘদিন ঘরে আটকে থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের মানসিক কষ্ট বাড়ছে; আর যত দিন যাচ্ছে, লেখাপড়া আর আসন্ন পরীক্ষার চিন্তা তাদের এ চাপ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। এমন মানসিক চাপে শিক্ষার্থীদের একটা অংশ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে পারে বলেও আশংকা প্রকাশ করেছেন তারা। তাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

জানা গেছে, আগামী আগস্ট বা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলে কিভাবে পরবর্তী পর্যায়ে পড়ালেখা চলবে তা নিয়ে কাজ শুরু করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এরই মধ্যে এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এনসিটিবিকে বিষয়টি নিয়ে পরিকল্পনা তৈরির মৌখিক নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

তারা মূলত দুটি প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে। প্রথমটি হচ্ছে— সিলেবাস ও ঐচ্ছিক ছুটি কমিয়ে চলতি বছরেই সব পরীক্ষা শেষ করা। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে— আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষ বাড়ানো। অর্থাৎ চলতি শিক্ষাবর্ষ শেষ হবে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। আর আগামী শিক্ষাবর্ষ শুরু হবে ২০২১ সালের মার্চ মাসে।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে একটি মিটিং করেছি। সেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে মূলত দুটি প্রস্তাব এসেছে। তবে পিইসি কিংবা জেএসসি পরীক্ষা বাতিলের বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি। আমরা পরবর্তীতে আবারো মিটিং করবো। সেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য যেটি ভাল হবে সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’