নিষিদ্ধ ইরানি পরিচালক জিতলেন আন্তর্জাতিক পুরষ্কার

সর্বোচ্চ শাস্তি বা মৃত্যুদণ্ড নিয়ে সিনেমা বানিয়ে বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরষ্কার জিতেছেন একজন নিষিদ্ধ ইরানি পরিচালক পরিচালক মোহাম্মাদ রাসুলফ। ২০১৭ সালে ইরানের সরকার রাসুলফের চলচ্চিত্র নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়, ফলে ‘দেয়ার ইজ নো ইভল’ নামে তিনি যে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন তার চিত্রায়নের কাজটি গোপনে করতে হয়েছে।

এর আগে বানানো সিনেমা নিয়ে কর্তৃপক্ষের আপত্তির কারণে রাসুলফকে বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হয়নি। বার্লিনে তার মেয়ে বারান, যিনি এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেছেন, তিনি বাবার পক্ষে পুরষ্কার গ্রহণ করেন।

জুরি প্রেসিডেন্ট জেরেমি আয়রনস বলেছেন, সিনেমায় চারটি মৃত্যুদণ্ড নিয়ে চারটি গল্প রয়েছে, যাতে দেখা যায়, ‘কর্তৃত্ববাদী সরকারের বোনা জালে বাধা পড়েছে বহু সাধারণ মানুষ, তাদের মধ্যকার মানবিকতাও হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ।’

উৎসবে দ্বিতীয় পুরষ্কার জিতেছে ‘নেভার রেয়ারলি সামটাইমস অলওয়েজ’ নামে গর্ভপাত নিয়ে বানানো একটি চলচ্চিত্র, মার্কিন পরিচালক এলাইজা হিটম্যান এর নির্মাতা। ভিডিও কলের মাধ্যমে রাসুলফ জানিয়েছেন, ‘দেয়ার ইজ নো ইভল’ চলচ্চিত্রটি মূলত মানুষের দায়িত্ব নেয়ার গল্প।

‘আমি এমন মানুষদের কথা কথা বলতে চেয়েছিলাম যারা কোন কিছু হলে নিজে দায়িত্ব না নিয়ে বলে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তারা আসলে 'না' বলে দিতে পারে, আর সেটাই তাদের শক্তি।’

বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে পুরষ্কার বিতরণের আগের দিন আয়োজকদের সঙ্গে স্কাইপে কথোপকথনের সময় রাসুলফ বলেন, ‘সিনেমার প্রতিটি ভাগের গল্প আসলে আমার নিজের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে বানানো।’

এরপর তিনি ব্যাখ্যা করছিলেন, সিনেমার একটি অংশে তিনি একজন ব্যক্তির চরিত্র আছে, যেটি তিনি নির্মাণ করেছেন এমন একজনের কথা ভেবে যিনি তাকে জেলখানায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। ওই লোকটিকে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণের পর মি. রাসুলফ বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি কত সাধারণ ছিলেন, এবং অন্য সবার সাথে তার কত মিল।

‘আমি বুঝতে পারলাম উনার মধ্যে কোন দৈত্যকে দেখছিনা আমি, আমার সামনে কোন শয়তান নাই। আমার সামনে এমন একজন মানুষ বসে আছে যে কেবল নিজের কর্মকাণ্ডকেই প্রশ্ন করছে না।’ মানবাধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন, ইরানে প্রতিবছর শত শত মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। বিবিসি বাংলা।