রেফারিকে মারধর করছেন এসপি হারুন (ভিডিও)

ফুটবল খেলা চলাকালে রেফারিকে এসপি হারুনের মারধর করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে- দর্শকের উপস্থিতিতে একজন রেফারিকে মারধর করছেন এসপি হারুনসহ পুলিশের সদস্যরা। এসময় দৌড়ে মাঠ ছাড়ছেন ওই রেফারি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি গত ২৯ জুনের। ওইদিন মাদক ও জঙ্গিবিরোধী ওই প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়। যেখানে এসপি হারুনের নেতৃত্বে পুলিশের দল ছিল লাল জার্সিতে। আর নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার নেতৃত্বে আকাশী জার্সিতে ছিল সোনারগাঁও ফুটবল দল। সোনারগাঁ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার তত্ত্বাবধানে বিকেল সাড়ে ৪টায় এ প্রীতি ফুটবল ম্যাচটি শুরু হয় সোনারগাঁও যাদুঘরের পাশে শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে। এ খেলায় এসপি একাদশের কাছে ২-০ গোলে পরাজিত হয় এমপি একাদশ।

ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে এসপি হারুন অর রশীদ একাদশের এক খেলোয়ার অফসাইড থেকে গোল করেন। রেফারি গোলটি বাতিল ঘোষণা করলে রেগে যান এসপি হারুন। গোল বাতিল করার ক্ষোভে দৌড়ে এসে রেফারিকে লাথি মারেন তিনি। আর সঙ্গে সঙ্গে চারদিক থেকে এসপি একাদশের অন্য খেলোয়াররা রেফারীকে ঘিরে ফেলে মারধর শুরু করে।  মারধর থেকে বাঁচতে রেফারী দৌড়ে মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উপস্থিত দর্শকেরা মাঠে নেমে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে দর্শকদেরও বাকবিতণ্ডা হয়।

এ সময় মাঠেই উপস্থিত ছিলেন এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। ওই ঘটনার পর খেলা চলাকালীন এমপি একাদশের এক খেলোয়ার খুব ভালোভাবে খেলছিলেন। একের পর এক এসপি একাদশের গোল পোস্টকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করে যাচ্ছিলেন। তখন এসপি একাদশের এক সদস্য পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখায় যাতে সে ভালো না খেলে।  এতে ভয় পেয়ে মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যায় ওই খেলোয়ার। পরে দশজনের দলের সঙ্গে এসপি একাদশের খেলোয়ার দুই গোল দেন। তবে ততক্ষণে দর্শকেরাও মাঠের খেলা ছেড়ে চলে যান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে রেফারিকে মারধর করা হয় তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশনের নিয়োগভুক্ত রেফারি। ফলে বিষয়টি চাপা দিতে তোড়জোড় শুরু করেছিলেন স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। সে সময় উপস্থিত দর্শকদের হুমকি দেওয়া হয় এসব ঘটনা প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। গণমাধ্যমের কর্মীদেরও ভিডিও দৃশ্য ধারণের মেমোরি কার্ড রেখে দেয়া হয়। যার ফলে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।

গত ৩ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদকে পুলিশ হেড কোয়ার্টারে বদলি করা হয়। আর গত ৭ নভেম্বর জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিদায় জানানো হয়। এরপর থেকে থেকে এসপি হারুনের কর্মকাণ্ড নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। সূত্র: সময় টিভি