প্রতিবাদ করতে সংখ্যা লাগে না

একজন হানিফ বাংলাদেশি পঁচা আপেল হাতে নিয়ে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পদযাত্রা শেষ করে গতকাল নির্বাচন কমিশনের সামনে অবস্থান করছিলেন। উনি কতক গুলো দাবি সম্বলিত প্লেকার্ড গলায় ঝুলিয়ে দাড়িয়ে আছেন নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে। উনার প্রধান দাবিটি হচ্ছে এই নির্বাচন কমিশন পঁচা আপেলের মতোই পঁচে গেছে। যদিও এই দাবি শুধু হানিফ বাংলাদেশির নয়, এই দাবি দেশের আপামর জনতার।

হানিফ বাংলাদেশি একজন তরতাজা যুবক। তিনি সাহস নিয়ে মাঠে নেমে গেছেন বেশ কতক দাবি নিয়ে যার প্রথমটিই নির্বাচন কমিশন সংস্থার করা। তিনি এটাও বলেন যে, যেহেতু নির্বাচন কমিশন এখনো আপেলের মতো পুরোটাই পঁচে নাই তাই দ্রুত পঁচা অংশ টা কেটে ফেলে দিয়ে বাকিটা সংস্থার করাটা জরুরি।

সে চিন্তিত উদ্বিগ্ন, কারণ আজকে জাতীয় থেকে স্থানীয় নির্বাচন গুলোতে মানুষ আর ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যায় না। কারণ জনগণ জানে ভোট যাকেই দেয় কোন লাভ নাই, যে জেতার সে ভোট দিলেও জিতবে না দিলেও জিতবে।

অনেক এলাকায় মসজিদের মাইকে মাইকিং করেও ভোটারদের কেন্দ্রে আনা সম্ভব হয় নি। অনেক এলাকায় তো বিরিয়ানি পার্টির রীতিমতো আয়োজন ভোটারদের কেন্দ্রে আনার জন্যে, তাতেও কি কাজ হয়েছে? এখন কথা হচ্ছে শুধু কি এই যুবকই উদ্বিগ্ন চিন্তিত। না, দেশের অধিকাংশ জনগণ আজ দেশের এই নির্বাচন ব্যবস্থার দুরবস্থা নিয়ে বড়োই উদ্বিগ্ন চিন্তিত। কিন্তু প্রতিবাদ কেউ করছে না।

হানিফ বাংলাদেশির দাবি এই নির্বাচন কমিশনে সব দলীয় এজেন্ট বসানো হয়েছে। কথা সত্য, এই দলীয় এজেন্ট যখন এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকবে তাদের দ্বারা নিরপেক্ষ গ্রহনযোগ্য নির্বাচন কি সম্ভব?

যাইহোক, আমার কথা হানিফ বাংলাদেশির দাবি গুলো নিয়ে নয়। আমার কথা হচ্ছে, দেশের আজকে হানিফ বাংলাদেশির মতো সবাই উদ্বিগ্ন চিন্তিত অথচ আমরা কেউ এর বিরুদ্ধে কথা বলি না প্রতিবাদ করি না।

স্যালুট হানিফ বাংলাদেশি! আপনি শুধু একজন যুবকই নন, আপনি আজ ১৭ কোটি জনগণের প্রতিচ্ছবি। আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য লক্ষ কোটি জনতা লাগে না। সাহস করে একবার দাড়িয়ে যান দেখবেন আপনার পিছনে লক্ষ কোটি জনগণ দাড়িয়ে গেছে।।


লেখক: সাবেক শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যুগ্ম-আহবায়ক বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।