৪৮তম বিসিএসের গেজেট কবে, যা বলছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় © ফাইল ছবি

৪৮তম বিশেষ বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের গেজেট আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি প্রকাশ করা হতে পারে। সুপারিশপ্রাপ্তদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন না আসায় গেজেট  প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে।

সম্প্রতি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে আলাপকালে এসব কথা জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগের যুগ্মসচিব রাহিমা আক্তার।

রহিমা আক্তার বলেন, ‘প্রায় তিন হাজার প্রার্থীর পুলিশ প্রতিবেদন এসেছে। তবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট এখনো আসেনি। এই রিপোর্ট আসার পর প্রতিটি রিপোর্ট আমাদের যাচাই করে দেখতে হবে। ফলে গেজেট প্রকাশে কিছুটা বিলম্ব হবে। আশা করছি জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি ৪৮তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্তদের গেজেট প্রকাশ করা সম্ভব হবে।’ 

এদিকে ৪৮তম বিশেষ বিসিএসে (স্বাস্থ্য) সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের গেজেট দ্রুত প্রকাশ ও পদায়নের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা। তারা বলছেন, সুপারিশের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও গেজেট প্রকাশ না হওয়ায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছেন। একইসঙ্গে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবাও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সোমবার ডি‌আর‌ইউ অডিটোরিয়ামে ৪৮তম বিশেষ বিসিএস (স্বাস্থ্য) সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসক ফোরামের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডা. দেবাশীষ দাস।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা জোরদারে চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে দুই হাজারের বেশি চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) গত ২৯ মে ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এরপর ১৮ জুলাই এমসিকিউ ধরনের লিখিত পরীক্ষা এবং ১০ সেপ্টেম্বর মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা) শেষে ১১ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। তবে ফল প্রকাশের তিন মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ হয়নি।

স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ডা. দেবাশীষ দাস বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ১২ হাজার ৯৮০টি চিকিৎসক পদ শূন্য রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে তীব্র চিকিৎসক সংকট থাকা সত্ত্বেও ৩৫০০ এর বেশি প্রস্তুত চিকিৎসককে পদায়ন না করে বসিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। এতে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এর আগে জানিয়েছিলেন, ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে তিন হাজারের বেশি চিকিৎসক নিয়োগের কার্যক্রম নভেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান দ্রুত ও স্বচ্ছ নিয়োগ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন। তবে বাস্তবে সেই আশ্বাসের প্রতিফলন এখনো দেখা যাচ্ছে না।

আয়োজকেরা জানান, দ্রুত নিয়োগের আশায় অনেক সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসক এফসিপিএস, এমডি-এমএসসহ চলমান উচ্চতর প্রশিক্ষণ ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু গেজেট ও পদায়ন বিলম্বিত হওয়ায় তারা এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। এতে একদিকে তাদের ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে একাডেমিক ধারাবাহিকতাও ব্যাহত হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে অবিলম্বে ৪৮তম বিশেষ বিসিএসর সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের গেজেট প্রকাশ ও দ্রুত পদায়নের দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন, এতে যেমন চিকিৎসকদের অনিশ্চয়তা দূর হবে, তেমনি দেশের তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবাও স্বস্তি পাবে।