গাইবান্ধার ৫ আসনে ৪৫ প্রার্থীর রেকর্ডসংখ্যক মনোনয়নপত্র জমা
- ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০৭
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমাদানের কার্যক্রমে গাইবান্ধা জেলায় রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনে মোট ৪৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, যা আগের নির্বাচনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি নির্দেশ করে এবং প্রতিটি আসনে তীব্র প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আসনভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে ১০ জন, গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে ৮ জন, গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্লাপুর) আসনে ১০ জন, গাইবান্ধা-৪ আসনে ৬ জন এবং গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারীদের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ, গণঅধিকার পরিষদ, ইনসানিয়াত পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, জেএসডি, আমজনতা পার্টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা রয়েছেন। এর ফলে নির্বাচনী মাঠ বহুমাত্রিক ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে মোট ১০ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির খন্দকার জিয়াউল ইসলাম, জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী, জামায়াতে ইসলামীর মাজেদুর রহমান মাজেদ, বাসদের পরমানন্দ দাস, ইসলামী আন্দোলনের মোঃ রমজান আলী, লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) মোঃ শরিফুল ইসলাম, আমজনতা পার্টির মোঃ কওছর আজম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজুল হক সরদার, মোছাঃ ছালমা আক্তার ও এবিএম মিজানুর রহমান।
গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে মোট ৮ জন প্রার্থী। এঁরা হলেন বিএনপির আনিসুজ্জামান খান বাবু, জাতীয় পার্টির আব্দুর রশীদ সরকার, জামায়াতে ইসলামীর মোঃ আব্দুল করিম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মিহির কুমার ঘোষ, খেলাফত মজলিসের এ কে এম গোলাম আযম, বাসদের আহসানুল হাবীব সাঈদ, ইসলামী আন্দোলনের মোঃ শাহেদুর জাহান এবং গণতান্ত্রিক জাতীয় পার্টি (জনতার দল) এর মোঃ মোসলেম আলী সরকার।
গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে মোট ১০ জন প্রার্থী। তালিকায় রয়েছেন বিএনপির অধ্যাপক ডাঃ সৈয়দ মইনুল হাসান সাদিক, জামায়াতে ইসলামীর আবুল কাওছার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির মইনুর রাব্বী চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলনের মোঃ এ টি এম আওলাদ হোসাইন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মিহির কুমার ঘোষ, খেলাফত মজলিসের এ কে এম গোলাম আযম, গণতান্ত্রিক জাতীয় পার্টির মোঃ মোসলেম আলী সরকার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আজিজার রহমান ও এস এম খাদেমুল ইসলাম খুদি।
গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে মোট ৬ জন প্রার্থী। এঁরা হলেন বিএনপির মোহাম্মদ শামীম কায়সার, জামায়াতে ইসলামীর মোঃ আব্দুর রহিম সরকার, জাতীয় পার্টির কাজী মোঃ মশিউর রহমান, ইসলামী আন্দোলনের সৈয়দ তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মোঃ আতোয়ারুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আব্দুর রউফ আকন্দ।
গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনে সর্বোচ্চ ১১ জন প্রার্থী। তালিকায় আছেন বিএনপির মোঃ ফারুক আলম সরকার, জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী, জামায়াতে ইসলামীর মোঃ আব্দুল ওয়ারেছ, ইসলামী আন্দোলনের মোঃ আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নুরুল হোসেন সরকার, গণ অধিকার পরিষদের মোঃ সামিউল ইসলাম, বাসদের মোছাঃ রাহেলা খাতুন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ, এ এইচ এম গোলাম শহীদ রজ্জু, মোঃ শুকুর উদ্দিন আকন্দ ও মোঃ ময়েন উদ্দিন।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নপত্র জমা শেষ হলেও যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চলমান। চূড়ান্ত বৈধতা যাচাই শেষে প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গাইবান্ধার প্রতিটি আসনেই প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দলের প্রার্থীদের উপস্থিতি নির্বাচনকে জটিল ও অপ্রত্যাশিত করে তুলতে পারে। বিশেষ করে গাইবান্ধা-১, গাইবান্ধা-৩ ও গাইবান্ধা-৫ এর মতো আসনে প্রার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ায় ভোট বিভাজনের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্য, যা ফলাফলকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের পর্ব শেষ হওয়ায় গাইবান্ধার রাজনৈতিক পরিবেশ ক্রমশ সক্রিয় হয়ে উঠছে। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ও প্রচারণা শুরুর পর এই প্রতিযোগিতা আরও তীব্র রূপ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।