শহীদ ওসমান হাদির স্মরণে ঢাকা কলেজে গ্রাফিতি অংকন
- ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:৪৩
শহীদ ওসমান হাদির আদর্শ, দর্শন, সংগ্রাম ও তার ত্যাগকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এবং হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকা কলেজে দেয়াল লিখন ও গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকা কলেজ ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীদের উদ্যোগে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
ঢাকা কলেজের নায়েমের গলি সংলগ্ন দেয়ালে একটি গ্রাফিতিতে লেখা হয়েছে, ‘দাসত্ব যে জমিনের নিশ্চল নিয়তি, লড়াই-ই সেখানে সর্বোত্তম ইবাদত।’ অন্যদিকে হল পাড়ায় একটি গ্রাফিতিতে লেখা হয়েছে ‘জান দেব, জুলাই দেব না’।
এ বিষয়ে ইনকিলাব মঞ্চ ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি এস বি সৈকত বলেন, শহীদ ওসমান হাদি ভাই বলেছিলেন ‘জান দেব, কিন্তু জুলাই দেব না।’ এই কথাটি শুধু একটি স্লোগান নয়, এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে অটল অবস্থানের প্রতীক। তার রেখে যাওয়া সেই জুলাইয়ের স্পৃহা ও চেতনাকে ধারণ করতেই আমরা হাদি ভাইয়ের ওপর গ্রাফিতি অঙ্কন করেছি, যাতে নতুন প্রজন্ম তার আদর্শ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারে। হাদি ভাইয়ের আত্মত্যাগ আমাদের দায়িত্ববোধকে আরও দৃঢ় করেছে অন্যায়ের সামনে মাথা নত না করার শপথই তার প্রকৃত সম্মান।
তিনি আরও বলেন, তার হত্যার সঙ্গে জড়িত সকলকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই দাবি ও সংগ্রাম চলমান থাকবে।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বানে শহীদ ওসমান হাদির হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে টানা তিন ধরে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ছাত্র-জনতা। একইসঙ্গে দেশব্যাপী গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা গ্ৰাফিতি অংকন করেছেন।
উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ওসমান হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গুলিবর্ষণকারী হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এক নেতাকে শনাক্ত করা হয়েছে, ওই আসামি ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে আলোচনা রয়েছে।
হাদিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের উদ্যোগে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ই ডিসেম্বর রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি শহীদ হন। ২০ ডিসেম্বর, শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে দাফন করা হয়।