সুদানে শহীদ ৬ বাংলাদেশি সেনার জানাজা সম্পন্ন
- ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪:৪৮
সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সংঘটিত বর্বরোচিত সন্ত্রাসী ড্রোন হামলার ঘটনায় শাহাদাত বরণকারী ৬ জন শান্তিরক্ষীর জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসস্থ কেন্দ্রীয় মসজিদে এ জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাযার নামাজে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব), সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন।
সামরিক-বেসামরিক বিভিন্ন কর্মকর্তা ও অন্যান্য সদস্যরাও অংশগ্রহণ করেন। জানাযা অনুষ্ঠানের পূর্বে শাহাদাতবরণকারী ব্যক্তিদের জীবন বৃত্তান্ত পড়ে শোনানো হয় এবং তাদের নিকট আত্মীয়রা বক্তব্য রাখেন। এরপর জাতিসংঘ মহাসচিব এর পক্ষে ইউনিসফা এর চিফ কমিউনিটি লিয়াজো অফিসার, মিস্টার বরিস-এফ্রেম চৌমাভি বক্তব্য প্রদান করেন।
জানাযা নামাজ শেষে তাদের প্রতি যথাযথ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদান করা হয়। এ সময় রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে তার সামরিক সচিব, সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান এবং বিমান বাহিনী প্রধান শাহাদাতবরণকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।



এরপর ইউনিসফা এর চিফ কমিউনিটি লিয়াজো অফিসার শাহাদাতবরণকারীদের নিকট আত্মীয়গণের কাছে জাতিসংঘ মহাসচিব এর পক্ষ থেকে জাতিসংঘের পতাকা হস্তান্তর করেন। আজ, রবিবার তাদের নিজ নিজ এলাকায় (নাটোর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রাজবাড়ী এবং কিশোরগঞ্জ) হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মরদেহ প্রেরণ করা হবে। এরপর যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাদের দাফনকার্য সম্পন্ন করা হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং জাতিসংঘ সদর দপ্তর কর্তৃক শাহাদাতবরণকারীদের পরিবারের নিকট আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
শান্তিরক্ষীদের মরদেহ গতকাল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঢাকায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে দেশে প্রত্যাবর্তন করে।

দেশে প্রত্যাবর্তনের পূর্বে আবেই'তে যথাযথ মর্যাদা এবং ভাবগাম্ভীর্যের সাথে শাহাদাতবরণকারী শান্তিরক্ষীদের জানাযা এবং সামরিক রীতি অনুযায়ী সম্মান প্রদর্শন করা হয়।
এই ড্রোন হামলার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার এবং জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ পূর্বক জাতিসংঘ সদর দপ্তরে একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ পত্র প্রেরণ করা হয়েছে এবং ইউনিসফাসহ সকল মিশন এলাকায় যথাশীঘ্র ড্রোন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় ৬ জন শান্তিরক্ষী শহীদ হন। পাশাপাশি ৯ জন শান্তিরক্ষী আহত হন, যাদের মধ্যে ৮ জন কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে অবস্থিত আগা খান ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল (লেভেল–৩ হাসপাতাল)-এ চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে সকলেই শঙ্কামুক্ত রয়েছেন।