‘সিন্ডিকেটমুক্ত’ গণতান্ত্রিক বিএনপির প্রত্যাশা

  • তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস

তারেক রহমান
তারেক রহমান © টিডিসি সম্পাদিত

দীর্ঘ ১৮ বছর লন্ডনে নির্বাসিত জীবন থেকে অবশেষে প্রিয় জন্মভূমিতে ফিরে আসছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) দুপুরে তিনি বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছে দলটি। ওইদিন বিমান বন্দর থেকে সরাসরি তিনি রাজধানীর বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতাল যাবেন। যেখানে তার মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন গেল নভেম্বর মাসের ২৩ তারিখ থেকে টানা চিকিৎসাধীন আছেন। হাসপাতালে যাওয়ার পথে দলের অন্যতম শীর্ষ নেতাকে রাজধানীর তিনশ ফিট এলাকায় গণসংবর্ধনা দেবে বিএনপি। এই উপলক্ষ্যে সারাদেশে থেকে লাখ লাখ নেতাকর্মীকে রাজধানীতে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে দলটি। 

এদিকে, দীর্ঘ নির্বাসন থেকে স্ব-ভূমে দলের অন্যতম নেতা ও ভবিষ্যৎ কান্ডারীর ফেরাকে কেন্দ্র করে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা। সেই সঙ্গে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে বেড়েছে প্রত্যাশাও। তারা আশা করছেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরার মধ্যদিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গড়ে উঠা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের সূতিকাগার বিএনপির রাজনীতিতে তৈরি হবে নতুন মাত্রা। দলে ফিরে আসবে প্রকৃত গণতান্ত্রিক পরিবেশ। বহুজনের (তৃণমূল) মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে দল পরিচালনা করবেন তারেক। নিয়ন্ত্রণ থাকবে না কোনো অসাধু সিন্ডিকেটের। ‘ভাইতন্ত্র’ বা ‘সিন্ডিকেটে’র বলয় থেকে বেরিয়ে প্রকৃত কর্মী ও কর্মীবান্ধব নেতাদের পদ-পদবীসহ সব বিষয়ে মূল্যায়ন করবে বিএনপি।

দীর্ঘ নির্বাসন থেকে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে বিএনপির বেশ কিছু সাধারণ কর্মী ও নেতার সঙ্গে কথা হয় দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের। তাদের মতামত ও অনুভূতিতে ফুটে উঠেছে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনার পাশাপাশি এমন প্রত্যাশার চিত্র।

বিএনপির র‌্যালি

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক নেতা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ম্যাডাম (বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া) যতদিন সুস্থ সাবলীল ছিলেন, তিনি নিজে চারদিকে খেয়াল রেখে সাধারণ নেতাকর্মীদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে দলে সিদ্ধান্ত নিতেন। ত্যাগী ও যোগ্যদের মূল্যায়ন করতেন। কিন্তু ম্যাডামের অসুস্থতা ও অবৈধ ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের রোষানলে মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন কারাবাসের কারণে আগেরমতো সরাসরি নেতৃত্ব দিতে পারেননি, বাস্তবতার কারণে। আর আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সুদূর লন্ডন থেকে দলকে পরিচালনা করেছেন, সংগঠিত রেখেছেন; বিগত পতিত সরকারের নানান বাধা ও নির্যাতনের মুখেও। এটা অবশ্যই তারেক রহমানের বিশাল সাফল্য। কিন্তু তিনি এই দীর্ঘ সময় দলকে পরিচালনা করেছেন শুধু নিজের মানসিক শক্তির জোরে ও কিছু নেতাকে বিশ্বাস করে। নিজের মানসিক শক্তিতে তিনি বিজয়ী হয়েছেন কিন্তু সব নেতাই যে তার বিশ্বাসকে উপযুক্ত মর্যাদা দিয়েছে, এটা কিন্তু বলা যাবে না। অনেকে ওনার বিশ্বাসের অমর্যাদা করেছেন। বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। ‘সিন্ডিকেট’ সৃষ্টি করে দল নয়, শুধু নিজেদের স্বার্থই হাসিল করেছেন। যে কারণে সারাদেশের তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রকৃত তথ্য ওনার কাছে অনেক সময় সঠিকভাবে পৌঁছায়নি। তৃণমূলের প্রকৃত চিত্র সম্পর্কে তিনি অন্ধকারে থেকেছেন। ‘সিন্ডিকেটবাজ’দের এই স্বার্থসিদ্ধির কারণে হাসিনা রেজিমে হাজার হাজার নির্যাতিত ও দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা অবমূল্যায়িত হয়েছেন। যার সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছে-ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের ধানের শীষের মনোনয়ন। এই মনোনয়নে সারাদেশের লাখ লাখ নেতাকর্মীর মতামতের বহিঃপ্রকাশ ঘটেনি। কার্যত ‘সিন্ডিকেট’ তাদের বলয়রক্ষা ও অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে মনোনয়নে প্রভাব বিস্তার করেছে। 

সূত্র জানায়, কমপক্ষে ৪টি সিন্ডিকেট ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে প্রভাব বিস্তার করেছে। এরমধ্যে ‘উত্তরবঙ্গ সিন্ডিকেট’, ‘চট্টগ্রাম সিন্ডিকেট’, বিগত পতিত সরকারের সময়ে দেশের ব্যাংক ও অর্থনৈতিক সেক্টর লোপাটকারী সবচেয়ে বিতর্কিত ব্যবসায়ী ‘এস আলম সিন্ডিকেট’, একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় কেন্দ্রীক ‘কর্মচারী সিন্ডিকেট’ বেশি সুবিধা পেয়েছে। এসব সিন্ডিকেট দলের ত্যাগী, নির্যাতিত, ভোটার ও সাধারণ নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্যদের বাদ দিয়ে অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে নিজেদের লোকদের ধানের শীষের প্রার্থীতা নিশ্চিত করেছে।  

এরমধ্যে ‘উত্তরবঙ্গ কেন্দ্রীক সিন্ডিকেটে’র আনুকূল্য বা প্রাধান্য পাওয়াদের মধ্যে অধিকাংশই ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের সেনাসমর্থিত বিশেষ সরকারের সময় দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতায় দীর্ঘদিন কোণঠাসা থাকা নেতা ও সাবেক সামরিক স্বৈরাচার এরশাদের জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা। বিএনপিতে এরা সংস্কারপন্থী হিসেবে চিহ্নিত।

তারেক রহমান

‘চট্টগ্রাম সিন্ডিকেট’ চট্টগ্রামসহ বৃহত্তম নোয়াখালী অঞ্চলের মনোনয়নে বিষয়ে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে। সাতকানিয়া-লোহাগাড়া, বাঁশখালী, পটিয়া, মীরসরাই, সীতাকুণ্ড, নোয়াখালী-৫, নোয়াখালী-৬ এবং আরও বেশ কয়েকটি আসনে এই সিন্ডিকেট তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজেদের লোককে ধানের শীষের মালিকানা দিয়েছে। 

ব্যাংক ও দেশের অর্থলুটেরা হিসেবে চিহ্নিত বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলমের ছায়াও বিএনপির মনোনয়নে ভর করেছে। বিদেশে পলাতক অবস্থায়ও এস আলম ধানের শীষের মনোনয়নে ব্যাপক প্রভাব রেখেছেন। বিশেষ করে চট্টগামের কোতোয়ালি বাকলিয়া, পটিয়াসহ আরও কিছু আসনে এস আলমের চাওয়া প্রাধান্য পেয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। 

অপরদিকে, গুলশান কার্যালয় কেন্দ্রীক সিন্ডিকেট যা বিএনপির অভ্যন্তরীণ আলোচনায় নেতাকর্মীরা ‘কর্মচারী সিন্ডিকেট’ হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন, তারা রাজধানীর ঢাকার নিকটবর্তী নারায়ণগঞ্জ ও চাঁদপুরের একাধিক আসনে নিজেদের লোককে ধানের শীষ পাইয়ে দিতে সফল হয়েছে বলে বিএনপিতে অভিযোগ। 

এদের বাইরে এক প্রভাবশালী নেতার মেয়ের জামাইও তার শ্বশুরের নাম ভাঙিয়ে বিএনপির মনোনয়নে সুবিধা আদায় করে নিয়েছেন বলে নেতাকর্মীদের মধ্যে অভিযোগ আছে। 

সূত্র জানায়, এসব অসাধু সিন্ডিকেটের কারণে বিএনপির অনেক ত্যাগী, নির্যাতিত, সাধারণ নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতা ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এদের মধ্যে ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বর্তমানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন, ছাত্রদলের অন্যতম জনপ্রিয় সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি বর্তমানে বিএনপির অন্যতম যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটো, ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, সাবেক ছাত্রদল নেতা হাসান মামুন, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু, সাবেক ছাত্রদল নেতা আবু বকর সিদ্দিক, আব্দুল মতিন, হাসিনা রেজিমে দুই দুইবার গুমের শিকার ও ব্যাপক নির্যাতিত ছাত্রদলের সাবেক নেতা মফিজুর রহমান আশিক, কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, ছাত্রদল ও যুবদলের সাবেক নেতা মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ প্রমুখ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা অন্যতম।     

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকি বিএনপির সিনিয়র এক নেতা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এবারের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশে প্রায় ১৩ কোটি ভোটার। এর মধ্যে কমপক্ষে ২২/২৪ শতাংশ তরুণ ভোটার। যারা জেন জি প্রজন্ম হিসেবে ব্যাপক প্রভাব বিস্তারী। তারা চায় বিতর্কহীন, স্বচ্ছ ইমেজের অধিকারী কর্মী ও জনবান্ধব নেতা জনপ্রতিনিধি হোক। কোনো বিতর্কিত, পেশিশক্তির অধিকারী বা অবৈধ টাকাওয়ালাকে তারা ভোট দেয়া তো দূরের কথা, ন্যূনতম ছাড়ও দেবে না। পাশাপাশি বিগত ফ্যাসিবাদের সময়ে দিনের ভোট রাতে ও পুলিশসহ অস্ত্রধারী ক্যাডারদের কেন্দ্র দখলের কারণে লাখ লাখ মানুষ ভোট দেয়া থেকে বিরত থেকেছেন। তারাও দীর্ঘদিন পর এবারের নির্বাচনে ভোট দেবেন। দেখেশুনে ও বুঝে নিজেদের ভোটাধিকার তারা প্রয়োগ করবেন। নিশ্চয়ই কোনো বিতর্কিতকে এই সচেতন ভোটাররা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন না। বিএনপিকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখতে হবে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরার অপেক্ষা করছে। অবশেষে তিনি সকল বাধা উপেক্ষা করে দেশে ফিরছেন। নেতার আগমনকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা। 

তিনি বলেন, পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরার খবরে আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিশাল প্রত্যাশাও তৈরি হয়েছে। কারণ বিগত ফ্যাসিবাদী হাসিনার কারণে ওনাকে দেশে ফিরতে দেয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি দূর থেকে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার পাশাপাশি পরিচালনা করেছেন। আন্দোলনের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। এ সবকিছুই তিনি করেছেন, নিজের ক্যাপাসিটি বলে ও নেতাদের বিশ্বাস করে। বিশ্বাসের বিকল্প কিন্তু ওনার ছিল না। কিন্তু আমাদের অনেকেই তার সেই বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে পারিনি। দলে নিজেদের বলয় গড়ে তুলে দলে কোন্দল, গ্রুপিং করেছে। নিজেদের লোককে পদে বসিয়েছে। 

অ্যাড. সালাম আজাদ আরও বলেন, এখন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফিরে শক্তহাতে দলের হাল ধরবেন, নিজে সব বিষয়ে খোঁজ-খবর নেবেন, ত্যাগী ও নির্যাতিতদের মূল্যায়ন করবেন। যাতে কোনো অসাধু লোক বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অবৈধ সুবিধা আদায় করতে না পারে। অতীতে শুধু দূরত্বের কারণে নিজের অনুপস্থিতির কারণে তিনি মাঠ পর্যায়ের প্রকৃত চিত্র থেকে বঞ্চিত হতেন। যে কারণে হয়ত কিছু সিদ্ধান্ত ভুল হত। এখন সেটা আর হবে না। এতে দল ও নেতাকর্মীরাও উপকৃত হবে।  

ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে ম্যাডামের পাশাপাশি সুদূর লন্ডন থেকে আমাদের নেতা তারেক রহমান বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ ও সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে ধরে রেখেছেন। শুধু আমাদের বিএনপির নেতাকর্মীদের নয়, দেশের লাখ লাখ জনগণের দীর্ঘ প্রত্যাশার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে তিনি দেশে ফিরছেন। তার আগমনে স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ নেতাকর্মীরা আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত ও উদ্দীপ্ত।

বিএনপি লোগো

তিনি বলেন, আমাদের নেতার (তারেক রহমান) দেশে আগমনের কারণে সাধারণ নেতাকর্মীদের প্রত্যাশার পারদ ঊর্ধ্বগামী। তিনি দূরে থাকায় দলে অনেক অসাধুরা নিজেদের অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নিয়েছে। তার উপস্থিতি সেই অসাধুদের অসাধুতা বাধাগ্রস্ত করবে। তিনি নিজে সরাসরি মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিশবেন। তাদের মনোভাব উপলব্ধি করবেন। সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন।   

আবেদ আরও বলেন, আমরা আশাবাদী আমাদের নেতার আগমনের মধ্যদিয়ে বিএনপি শহীদ জিয়ার প্রকৃত জাতীয়তাবাদী চেতনার সত্যিকার গণতান্ত্রিক দল হিসেবে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক দল হয়ে মনে দৃঢ় অবস্থান সৃষ্টি করবে।

ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, দলের জন্য সাড়ে তিন বছর জেল খেটেছি। নির্বাচনী এলাকায় আমার গ্রহণযোগ্যতা আছে। তিল তিল করে জনগণের মনে আমি ঠাঁই আমাকে বঞ্চিত করে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত পুটিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মন্ডলকে ধানের শীষ দেয়া হয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন লোককে বিএনপি প্রার্থী করেছে এই কারণে জামায়াতের লোকজন খুশিতে মিষ্টি বিতরণ করেছে। আর পুটিয়া-দূর্গাপুর নির্বাচনী এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করছেন। দলীয় প্রার্থীকে নেতাকর্মীরা বয়কট করেছেন। 

তিনি বলেন, তারেক রহমান আমাদের ঐক্যর প্রতীক। দীর্ঘকাল ওনি দেশের বাইরে থাকার কারণে ছাত্রদলের অরিজিনাল প্রোডাক্ট তাদেরকে ঠিকভাবে সেটআপ করতে পারেননি। ওনার অনুপস্থিতির কারণে বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ছাত্রদলের যারা এলাকাভিত্তিক যোগ্য দক্ষ ও পরীক্ষিত নেতা আছেন তাদের উপযুক্ত স্থানে মূল্যায়ন করা হয়নি। দলের প্রতি তাদের রাজনৈতিক দক্ষতা ও ডেডিকেশন দলের সার্বিক কল্যাণে প্রয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা মনে করি তারেক রহমান দেশে ফিরলে ওনি দলের প্রয়োজনে এই সমস্ত ত্যাগী-পরীক্ষিত দক্ষ নেতাদের কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে সঠিক মূল্যায়ন করে দলের প্রয়োজনে কাজে লাগাবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।  

এক প্রশ্নের জবাবে বকর বলেন, যাদের কারণে ছাত্রদলের অরিজিনাল প্রোডাক্ট গ্রহণযোগ্য নেতারা মূল্যায়িত হননি, হচ্ছেন না; তারা কারা? তারাই তো অসাধু সিন্ডিকেট। আমাদের নেতা দেশে ফিরলে এই অবৈধ সিন্ডিকেট আর নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পারবে না, আমরা ছাত্রদলের সাবেক নেতারা বিশ্বাস করি।