হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:৫১
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদ এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর জবি প্রধান ফটকের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিশ্বজিৎ চত্বর হয়ে লক্ষ্মীবাজার মোড় ঘুরে আবার প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমি কে তুমি কে, হাদি হাদি; আমার সোনার বাংলায় খুনি লীগের ঠাঁই নাই; ফ্যাসিবাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না; হাদি ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দিবো না; আমরা সবাই হাদি হব, যুগে যুগে লড়ে যাব’ স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে জবি শিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফ ‘বাণী ভবন’ হলকে ‘শহীদ শরীফ ওসমান হাদি’ হল নাম করার প্রস্তাব দেন।
আরও পড়ুন : উস্কানিতে পা না দিয়ে ধৈর্য্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলার আহ্বান জামায়াত আমিরের
এর আগে বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, বুধবার সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে হাদিকে দেখতে যান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান। পরে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোন করে হাদির শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানান। ওই বার্তার পর থেকে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে শঙ্কা বাড়ছিল। অনেকে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে তাঁর জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করেন।
গতকাল রাতে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে এক বার্তায় বলা হয়, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।’
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি নির্বাচন করার জন্য প্রচার চালাচ্ছিলেন। গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে তাঁকে গুলি করা হয়। মাথায় গুলিবিদ্ধ হাদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে নেওয়া হয় এভারকেয়ার হাসপাতালে। গত সোমবার দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সঙ্গে তাঁর ভাই ছাড়াও বাংলাদেশি চিকিৎসক ও নার্সরা গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন : শিক্ষক পরিবারের সন্তান হাদির একাডেমিক ফলাফল যেমন ছিল
সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, ১২ ডিসেম্বর দুপুর ২টা ২৫ মিনিটের দিকে হাদিসহ দুজন একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় যাচ্ছিলেন। তখন মোটরসাইকেলে আসা ব্যক্তিরা তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায়। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। তখনই চিকিৎসকরা জানান, তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রেখে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে গুলির খণ্ডিতাংশ বের করা হয়। সন্ধ্যায় তাঁকে স্থানান্তর করা হয় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে। সেখান থেকে ১৫ ডিসেম্বর তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।
ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা মিলিয়ে গুলির ঘটনায় দুজনকে শনাক্ত করা হয়। তাদের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ গুলি ছোড়েন এবং তাঁকে বহনকারী মোটরসাইকেলটি চালান আলমগীর হোসেন ওরফে আলমগীর শেখ। দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গুলির ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে দেশ ত্যাগ করেন তারা।