মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন © সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দায়িত্ব ও করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমেদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ডিন, পরিচালক, বিভাগীয় প্রধান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অনুষদ সদস্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছিলেন।

কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। 

এনএসইউর কোষাধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবদুর রব খান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বিজয় দিবস আমাদের জন্য একটি মহান ও গৌরবময় দিন, যা আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও আনন্দের সঙ্গে উদ্‌যাপন করি। এই দিনটি আমাদের জাতীয় জীবনে অনুপ্রেরণার প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের শুধু সাহসের শিক্ষাই দেয় না, বরং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণাও জোগায়।’ 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ কোন রাজনৈতিক দলের একক কৃতিত্ব নয়। কোন রাজনৈতিক দলের ডাকে মানুষ এই যুদ্ধে যোগ দেয় নি। ন্যায়বিচার ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের সর্বস্তরের মানুষ এই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলো। এই যুদ্ধ ছিলো জনতার যুদ্ধ।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যে আদর্শ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম, তার অনেক কিছুই এখনো বাস্তবায়িত হয় নি। তবে আমাদের ছাত্রসমাজ চব্বিশের অভ্যুত্থানে যে বীরত্ব দেখিয়েছে, তা আবারও আমাদের দেশ নিয়ে ইতিবাচক হতে উদ্বুদ্ধ করে।’

বিশেষ অতিথি বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গৌরবময় দিন। অনেক রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা এই দিনে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব, যেন তারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশগঠনে অবদান রাখতে পারে।’

উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী বলেন, ‘নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আমরা এমন একটি পরিবেশ গড়ে তুলেছি, যেখানে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান ও বিজ্ঞানের পাশাপাশি সংস্কৃতি ও ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পারে। আমাদের লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমিক, মানবিক ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা, যারা ভবিষ্যতে দেশ-বিদেশ যেখানেই কাজ করুক না কেন, বাংলাদেশের মর্যাদা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশগঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

অনুষ্ঠানের শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।