আজ মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর ১৪৫তম জন্মবার্ষিকী

মাওলানা ভাসানী
মাওলানা ভাসানী © সংগৃহীত

স্বাধীনতার ইতিহাসে অনন্য নাম মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। সমাজের নিপীড়িত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আজীবন লড়াই করা এই মহান নেতার আজ ১৪৫তম জন্মবার্ষিকী। ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে জন্ম নেওয়া ভাসানী বাংলাদেশের রাজনীতি ও গণআন্দোলনের এক অবিচ্ছেদ্য চরিত্র।

ছোটবেলা থেকেই দরিদ্র ও কৃষকশ্রেণির পাশে দাঁড়ানো ভাসানী পরবর্তীতে খেলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনে যুক্ত হয়ে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখসারিতে উঠে আসেন। তৃণমূল-নির্ভর রাজনীতির মাধ্যমে তিনি দ্রুত হয়ে ওঠেন জনগণনন্দিত নেতা।

দেশভাগের সময় ও পরবর্তী রাজনৈতিক পরিবর্তনগুলোতে ভাসানীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী মুসলিম লীগের সূচনালগ্নের প্রভাবশালী নেতাদের একজন ছিলেন। পরবর্তীতে সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক দাবি-দাওয়া সংগঠিত করতে গড়ে তোলেন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। তাঁর পুরো রাজনৈতিক জীবনজুড়েই কৃষক-মেহনতি মানুষের অধিকার রক্ষাই ছিল প্রধান ব্রত।

টাঙ্গাইলের সন্তোষ ছিল তাঁর রাজনীতি ও মানবকল্যাণমুখী কর্মের কেন্দ্রবিন্দু। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর চেয়ারম্যান হিসেবে জাতির সংকটে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর তাঁর জীবনাবসান ঘটে। সন্তোষেই তাঁর চিরনিদ্রার ঠিকানা। কিন্তু আদর্শ ও চিন্তা আজও বেঁচে আছে রাজনীতি, সমাজচিন্তা ও মুক্তির আন্দোলনের অনুপ্রেরণা হিসেবে।

আজ তাঁর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে আলোচনা, দোয়া মাহফিল, স্মরণসভা ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে মানুষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছে এই কিংবদন্তি নেতাকে। মাওলানা ভাসানীর জীবনদর্শন এখনও মনে করিয়ে দেয়— অত্যাচারিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোই মানবতার সর্বোচ্চ দায়িত্ব।