মোহাম্মদপুরে মা–মেয়ে খুন নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানালেন গৃহকর্মী আয়েশার স্বামী
- ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:৫৯
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার গৃহকর্মী আয়েশার স্বামী রবিউল ইসলাম চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তাঁর দাবি, চুরি করতে গিয়ে গৃহকর্ত্রীর হাতে ধরা পড়ায় আতঙ্কে আয়েশা দু’জনকেই হত্যা করেন।
আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠির নলছিটির কয়ারচর গ্রাম থেকে আয়েশা ও তাঁর স্বামী রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা–পুলিশ। মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে নয় সদস্যের একটি দল এ অভিযান চালায়।
গ্রেপ্তারের পর রবিউল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সে ভাবছিল কিছু জিনিস চুরি করে আমারে দিব। গৃহকর্ত্রী পেছন থেকে ধরে ফেলার পরই সে চাকু দিয়ে কোপাতে থাকে। যতক্ষণ ধরে রাখছে, ততক্ষণ সে কোপ দিতেছে। এরপর তার মেয়ে আসলে তাকেও মারছে।’
আরও পড়ুন: মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কেন খুন করলেন, জানালেন গৃহকর্মী আয়েশা
এদিকে পুলিশ জানায়, ঘটনার চার দিন আগে আয়েশা শাহজাহান রোডের ১৪ তলা ভবনের সাততলায় গৃহকর্মীর কাজ নেন। নিজেকে আয়েশা নামে পরিচয় দেন। সোমবার সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরকা পরে বাড়িতে ঢোকেন তিনি। দেড় ঘণ্টা পর সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে নাফিসার স্কুল–ড্রেস ও মাস্ক পরে ভবন থেকে বেরিয়ে যান। সিসিটিভিতে সেই দৃশ্য স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে।
পুলিশের ধারণা, গৃহকর্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর ঘটনাটি দেখে ফেলায় নাফিসাকেও একই অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়। মাকে মৃত অবস্থায় দেখে নাফিসা ইন্টারকমে ফোন দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেই মুহূর্তে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। ধস্তাধস্তির সময় ইন্টারকমের লাইন খুলে যায়। তল্লাশিতে বাথরুম থেকে একটি সুইচ–গিয়ার ছুরি ও একটি ফল কাটার ছুরি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ মনে করছে, এই অস্ত্রগুলো দিয়েই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে।
ঘটনার সময় নাফিসার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম (উত্তরার সানবীমস স্কুলের শিক্ষক) বাসায় ছিলেন না। তিনি সকাল ৭টার দিকে কাজে বের হন এবং সাড়ে ১১টার দিকে বাসায় ফিরে স্ত্রী ও মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় পান। ঘটনার পর তিনি গৃহকর্মী আয়েশাকে আসামি করে মামলা করেন।
এ ঘটনায় ভবনের দারোয়ান মালেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। হত্যার প্রকৃত উদ্দেশ্য ও পেছনের কারণ জানতে আয়েশাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।