শাটলে চবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

শিক্ষার্থীকে মারধর
শিক্ষার্থীকে মারধর © টিডিসি ফটো

শাটল ট্রেনে বসাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ফাইন্যান্স বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম রামপ্রসাদ সাহা। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহরগামী ৪টা ৪০ এর শাটলে মারধরের ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মারধরের অভিযোগের ভিডিও ভাইরাল নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ফাইন্যান্স বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী স্যামুয়েল গনসালবেস বলেন, বিকেলের শাটলে রামপ্রসাদ সাহা ভাইয়া এবং উনার পাশে আরেকজন বসা ছিল পরে আরেকজন এসে বসতে চেয়েছিল। রামপ্রসাদ ভাইয়া বললেন যে না ৩ জন বসা যাবে না। এ নিয়ে তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর সামনের সিটের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের রিয়াজ নামের একজন রামপ্রসাদকে বহিরাগত ট্যাগ দিয়েই মারা শুরু করে। উনার সাথে আরো কয়েকজন ছিল উনারাও তাকে মারা শুরু করে। মারতে মারতে ট্রেন থেকে উনাকে স্টেশনে নামিয়ে থাপ্পড় দিয়ে বিভাগ ও শিক্ষাবর্ষ জিজ্ঞেস করে। এরপর উনাকে টেনেটুনে আবার ট্রেনে তুলে মারধর করে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রামপ্রসাদ সাহৌ বলেন, আমি আজ বিকেলের শাটলে ক্যাম্পাস থেকে টিউশন করাতে শহরে যাচ্ছিলাম। আমি সাড়ে ৪টার দিকে শাটলে সিট নিয়ে বসি। আমার পাশের সিটে একজন এবং সামনের সিটে তিনজন বসেছিল। পরে আরেকজন এসে আমাকে একটু বসার জায়গা দিতে বলে। আমি তাকে বসার জায়গা দিই কিন্তু তারপরও সে বলে তার বসার জায়গা হচ্ছে না। এরপর আমার সামনে বসা একজন এসে বলে, ‘এই, তুই কি স্টুডেন্ট?’ আমি পরিচয় দেওয়ার পর সে বলে, ‘তুই মিথ্যা বলতেছিস। তোর আইডি কার্ড দেখা। তুই কে? তুই এখান থেকে উঠ।’ এসব বলার পর আমি আইডি কার্ড দেখাই। আইডি কার্ড দেখার পরও তারা আমাকে মারধর করে। পরে যে বসতে চাচ্ছিল সেও আমার কলার ধরে মারধর করে।

ভুক্তভোগী বলেন, আমার কানের এক পাশে ইনজুরি ছিল; সেই স্থানটিতে তারা বারবার আঘাত করছিল। মারধরের সময় আমি প্রায় অজ্ঞান হয়ে যাই। আমি ভিডিও করার চেষ্টা করলে তারা আমার মোবাইল কেঁড়ে নেয়। এক পর্যায়ে তারা আমাকে ট্রেন থেকে নামিয়ে স্টেশনের সিটে বসিয়ে মারধর করে। সেখান থেকে আবার ট্রেনের ভেতরে এনে আবারও মারধর করে।

তিনি আরও বলেন, আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় বছর ধরে পড়াশোনা করছি। এ ছয় বছরে আমি কোনো খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত হইনি এবং কোনো রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত নই। আমি ডিপার্টমেন্টে যাই, ডিপার্টমেন্ট থেকে সরাসরি চলে আসি। তারপরও আজ আমার সঙ্গে এ ঘটনাটি ঘটল। আমি এই ঘটনার বিচার চাই। আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার নিশ্চিত করুক।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রিয়াজ শিকদার বলেন, আমরা তো সাধারণত শাটলে ৩ জন করে বসি, উনারা ২ জন বসা ছিলেন। আমি উনাকে চেপে বসতে বলেছিলাম। তখন সে না চেপে উগ্রতা দেখিয়ে বলে, 'আমার সেশন ১৯-২০ তুই কে?' এরপর আমিও ১৯-২০ বলে দাঁড়াতেই সে আমার বুকে ঘুষি মারে। ঘুষিটা আমার শরীরে লাগে এবং পাশে আরেকটা ছেলে ছিল তার গায়েও লাগে। তার গায়ে লেগে তার হাত কেটে যায়। এরপর আমাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয় এবং বগির ভিতরে যখন দেখা যাচ্ছে যে সে চাপবে না তখন বাকিরা তাকে ধরে বাহিরে নিয়ে যায়। পরে কী করেছে আমি সেটা জানি না কারণ আমি তখন বগির ভিতরেই ছিলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, ঘটনা শুনার পরপরই প্রক্টরিয়াল বডির পক্ষ থেকে আমার সহকারী প্রক্টর সাঈদ বিন কামাল চৌধুরী সেখানে উপস্থিত হয়েছে এবং এটার মীমাংসা করে দিয়েছে। আগামীকাল তারা অভিযোগ দিবে অভিযোগ দেয়ার পর সেই প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নিব।