বিডিআরের পোশাক তৈরি নিয়ে বিতর্ক, যে ব্যাখ্যা দিলেন সোহেল তাজ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রায় এক যুগ পর পুনরায় আলোচনায় এসেছে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজের নাম। জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে তার বিষয়ে নতুন তথ্য উল্লেখ হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন ও সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে বিডিআর ইউনিফর্ম তৈরিতে তার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

বিষয়টি নিয়ে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দীর্ঘ ব্যাখ্যা দিয়েছেন সোহেল তাজ। 

স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘অনেকেই বিডিআর কমিশনের রিপোর্টের বরাত দিয়ে ভুল ব্যাখ্যার মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এরই একটি উদাহরণ ইউনিফর্ম নিয়ে—এই ইউনিফর্ম আমার জন্য বানানো হয়েছিল। বিডিআর-এর ডিজি জেনারেল শাকিল আমাকে অনুরোধ করেছিলেন তার সঙ্গে বর্ডার এলাকায় BOP প্রদর্শনে যাওয়ার জন্য। আমি আমেরিকা সফর থেকে ফিরে এসে মার্চ মাসে যাবার সম্মতি দিয়েছিলাম। কমিশনকে দেওয়া আমার লিখিত স্টেটমেন্টেও বিষয়টি উল্লেখ করেছি।’

তিনি পোস্টে তদন্ত কমিশনকে দেওয়া ৪ মার্চ স্টেটমেন্টের অংশ তুলে ধরেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থাগুলোর কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকায় বিডিআর ডিজি শহীদ মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল তার। তিনি দুইবার পিলখানায় পরিদর্শনে যান—প্রথমবার মন্ত্রীর সঙ্গে, দ্বিতীয়বার ডিজির ব্যক্তিগত অনুরোধে। ডিজি তাকে জানিয়েছিলেন, সামরিক কর্মকর্তারা তার সঙ্গে দেখা করতে চান, এবং তিনি নিজেও তাদের সাহসী ভূমিকার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।’

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জন্য কাল বাদ জুমা দেশের সকল মসজিদে দোয়ার আহ্বান সরকারের

স্টেটমেন্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘ডিজি শাকিলের সঙ্গে সীমান্ত নিরাপত্তা, ভারত ও মিয়ানমারের বর্ডার ইস্যু, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধ এবং ছিটমহল পুনরুদ্ধারসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার কথা। ১৫–১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯-এর দিকে ডিজি তাকে BOP পরিদর্শনে যাওয়ার অনুরোধ করেন। সোহেল তাজ জানান, ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করবেন, মেয়ের জন্মদিন ও একজন নিকট আত্মীয়ের শারীরিক কারণে—এ তথ্য ডিজিকে জানিয়েছিলেন।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে ডিজির সঙ্গে হেলিকপ্টারে BOP পরিদর্শনে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল এবং সেই ভ্রমণ নিয়ে তিনি নিজেও বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলেন, কারণ এর আগে কখনো হেলিকপ্টারে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে ১৮ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রগামী ফ্লাইটে ওঠা এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কে পৌঁছানোর পর আর ডিজির সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। জেএফকে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাকে রিসিভ করেন এবং তিনি সেখান থেকে ট্রেনে মেরিল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হন।’

নিজের ব্যাখ্যায় সোহেল তাজ দাবি করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ছড়ানো তথ্য বিভ্রান্তিকর এবং কমিশনে দেওয়া তার লিখিত স্টেটমেন্টেই ঘটনার প্রকৃত বিবরণ রয়েছে।