কোয়ান্টাম ফিজিকসে পিএইচডি করল ১৫ বছরের কিশোর, বিশ্বজুড়ে আলোচিত কে এই শিক্ষার্থী?

লরেন্ট সিমন্স
লরেন্ট সিমন্স © সংগৃহীত

আপনার বয়স যখন ১৫, অর্থাৎ কিশোর, আপনি হয়তো স্কুলে পড়াশোনা করতেন। হয়তো বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলায় বেশি সময় কাটাতেন। তবে বেলজিয়ামের লরেন্ট সিমন্স ১৫ বছর বয়সে যা করে দেখিয়েছে, তা শুনলে যে কেউ অবাক হয়ে যাবেন।

১৫ বছর বয়সী লরেন্ট কিশোরকে ডাকা হচ্ছে ‘বেলজিয়ামের লিটল আইনস্টাইন’। সম্প্রতি সে ইউনিভার্সিটি অব অ্যান্টওয়ার্প থেকে পিএইচডি থিসিস ডিফেন্ড করেছে। তাও আবার কোয়ান্টাম ফিজিকসে! লরেন্টই এখন বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী ব্যক্তি, যে পদার্থবিজ্ঞানের জটিল শাখায় ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করল।

আমরা যখন ১২ বছর বয়সে সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণির অঙ্ক করতে হিমশিম খাই, তখন সে বোসন কণা ও ব্ল্যাকহোল নিয়ে গবেষণা করে মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়েছে। পড়ে ফেলেছে পৃথিবীর নানা বিজ্ঞানগ্রন্থ। কীভাবে এটা সম্ভব হলো?

জানা গেছে, লরেন্টের আছে ফটোগ্রাফিক মেমোরি। মানে সে যা একবার দেখে বা পড়ে, তা ছবির মতো মনে রাখতে পারে। তার আইকিউ ১৪৫! বিশ্বের মাত্র ০.১ শতাংশ মানুষের এমন অসাধারণ মেধা থাকে।

লরেন্টের পড়াশোনার গতি কোনো সাধারণ ছাত্রের মতো নয়, বরং সুপারসনিক প্লেনের মতো। মাত্র ৪ বছর বয়সে সে প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হয় এবং ৬ বছর বয়সেই তা শেষ করে ফেলে!

ভাবতে পারেন, এত পড়াশোনা কি শুধুই রেকর্ডের জন্য? মোটেই না। এর পেছনে আছে এক আবেগের গল্প। ১১ বছর বয়সে লরেন্ট তার দাদা-দাদীকে হারায়। সেই শোক তার মধ্যে এক অদ্ভুত জেদ এনে দেয়।

তার লক্ষ্য এখন পিএইচডির চেয়েও বড় কিছু। সেটা হলো ‘অমরত্ব’। না, জাদুর কোনো মন্ত্র নয়, সে চিকিৎসাবিজ্ঞানের মাধ্যমে মানুষের আয়ু বাড়াতে চায়। অমরত্ব না পেলেও মানুষ যাতে আরও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে, তা নিয়েই সে এখন কাজ করবে। তাই পদার্থবিজ্ঞানের পাট চুকিয়ে তার পরের গন্তব্য মেডিকেল সায়েন্স।

লরেন্টের অবিশ্বাস্য প্রতিভার খবর পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বড় বড় টেক জায়ান্টরা তাকে লুফে নিতে চাইছে। কিন্তু লরেন্টের বাবা-মা সব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন।

লরেন্টের বাবা বলেছেন, ‘লরেন্ট দুটো সত্তা ধারণ করে। একজন বিজ্ঞানী, আর একজন সাধারণ কিশোর। আমরা চাই না লরেন্ট গবেষণাগারে বন্দি হয়ে তার শৈশব হারাক।’

অবশ্য লরেন্টই ইতিহাসের সবচেয়ে কম বয়সী ডক্টরেট নয়। ১৮১৪ সালে কার্ল উইট মাত্র ১৩ বছরে পিএইচডি করেছিল। কিন্তু আধুনিক যুগে, তাও আবার কোয়ান্টাম ফিজিকসের মতো কঠিন বিষয়ে ১৫ বছরেই ডক্টরেট করা সত্যিই বিস্ময়!

তথ্যসূত্র: বিবিসি