আকাশচুম্বী নয়, পে-স্কেল নিয়ে যেমন সুপারিশ চাইলেন সচিবরা

পে কমিশন
পে কমিশন © ফাইল ছবি

নবম পে-স্কেল নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরে কর্মরত সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেছে পে-কমিশন। বৈঠকে নবম পে-স্কেল নিয়ে আকাশচুম্বী সুপারিশ না করে বাস্তবসম্মত সুপারিশের মতামত দিয়েছেন সচিবরা।

সম্প্রতি চারটি ধাপে ৭০ এর অধিক সচিবের সঙ্গে সভা করেছে পে-কমিশন। প্রতিটি ধাপে ১৭ কিংবা তার অধিক সচিব কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মতামত দিয়েছেন। গত সোমবার (২৪ নভেম্বর) প্রথম ধাপে সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করে কমিশন।

রবিবার (৩০ নভেম্বর) পে-কমিশনের একটি সূত্র দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, নবম পে-স্কেল নিয়ে অনলাইনে মতামত গ্রহণের পর প্রায় আড়াই শতাধিক সংগঠনের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। সবশেষ ৭০ এর অধিক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মতামত নেওয়া হয়েছে। সচিবদের মতামতগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে পে-কমিশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, ‘৭০ এর অধিক সচিবের মতামত গ্রহণ করা খুবই কঠিন বিষয় ছিল। সব সচিবকে একসঙ্গে পাওয়া যাবে না, এটি ধরেই চারটি ধাপে সভা করা হয়েছে। প্রতিটি ধাপে ১৭ কিংবা এর অধিক সচিব সভায় অংশগ্রহণ করেছেন। তারা গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিয়েছেন। মতামতগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কমিশন নির্ধারিত সময়েই তাদের সুপারিশ জমা দেবে।’

সচিবরা কেমন পে-স্কেলের সুপারিশ করেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সচিবরা নানা মতামত দিয়েছেন। তবে অধিকাংশ সচিব একটি বাস্তবসম্মত সুপারিশ প্রণয়নের প্রস্তাব করেছেন। কোনো কোনো সংগঠন বর্তমান বেতন স্কেলের চেয়ে তিনগুন, চারগুন বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন। এ ধরনের আকাশচুম্বী প্রস্তাব গ্রহণ না করতে মতামত দিয়েছেন সচিবরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘সচিবরা বলেছেন বর্তমান দ্রব্যমূল্যোর ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে বেতন স্কেলের যেন সামঞ্জস্য থাকে, কমিশনকে সেভাবে সুপারিশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী ৫-১০ বছর পর নিত্যপণ্যের দাম কেমন হতে পারে সেটিও বিবেচনায় নিতে বলা হয়েছে। প্রস্তাবে সচিবরা সরকারের আর্থিক সক্ষমতার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন কমিশনকে।’

গত ২৪ নভেম্বর সচিবদের সঙ্গে প্রথম বৈঠক শেষে পে-কমিশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। তবে সব সচিব সভায় উপস্থিত হননি। পরবর্তীতে সচিবদের নিয়ে আবারও আলোচনা হবে।’ কবে নাগাদ সুপারিশ হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ‘আলোচনা শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দিতে পারব বলে আশা করছি।’ এর একদিন পরেই দ্বিতীয় পর্যায়ে সচিবদের সঙ্গে বসে কমিশন।

এদিকে কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুপারিশ চূড়ান্ত করতে কমিশনের সদস্যরাসহ সংশ্লিষ্টরা পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছেন। এই মুহূর্তে অর্ধেকের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। আগামী মাসেই চূড়ান্ত সুপারিশ দাখিল করা হতে পারে। এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বেতন এবং গ্রেড ভাঙার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি কমিশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবির। বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, কমিশনের চেয়ারম্যান তো ব্যক্তিগতভাবে উনার মতামত ব্যক্ত করতে পারেন না। কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তাদের মতামত নিয়েই যে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সে অনুযায়ী চেয়ারম্যান আমাদের কাছে যে অভিমত বা কার্যক্রমের অগ্রগতির কথা ব্যক্ত করেছেন তাতে আমরা সন্তুষ্ট।’