কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি শিক্ষা ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ সহকারী অধ্যাপকদের

শিক্ষা মন্ত্রণালয়
শিক্ষা মন্ত্রণালয় © ফাইল ছবি

বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের সহকারী অধ্যাপকরাও দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন। এবার তারা কর্মবিরতিতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। ২৬তম থেকে ৩১তম বিসিএস ব্যাচের সহকারী অধ্যাপকরা জানিয়েছেন, তারা সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করলেও বহু বছর ধরে পদোন্নতি আটকে রয়েছে। সম্প্রতি আন্দোলনের পর প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে ৩৫তম ব্যাচ পর্যন্ত এক হাজার ৮৭০ জন কর্মকর্তা পদোন্নতি পেলেও সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি স্থবির হয়ে রয়েছে বছরের পর বছর।

সহকারী অধ্যাপকদের অভিযোগ, ২৬তম থেকে ৩১তম বিসিএস ব্যাচের সহকারী অধ্যাপকরা কয়েক বছর আগে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করলেও তারা এখনো আগের পদেই আটকে আছেন। ২৬তম ব্যাচ ২০১৬ সালে, ২৭তম ব্যাচ ২০১৭ সালে, ২৮তম ও ২৯তম ব্যাচ ২০১৯ সালে এবং ৩০তম ব্যাচ ২০২০ সালে সহযোগী অধ্যাপক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। কেউ কেউ টানা ১৩ বছর, আবার কেউ ৮ বছর ধরে একই পদে কর্মরত আছেন।

চাকরিতে যোগদানের পর ২৬তম ও ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা ২০ ও ১৮ বছরে মাত্র একবার পদোন্নতি পেয়েছেন। অন্যদিকে একই সময়ে চাকরিতে যোগদান করা অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা ব্যাচভিত্তিক নিয়মিত পদোন্নতির মাধ্যমে ৩০তম ব্যাচ পর্যন্ত ৫ম গ্রেডে পৌঁছালেও শিক্ষা ক্যাডারের সংশ্লিষ্ট ব্যাচগুলো এখনো ৬ষ্ঠ গ্রেডেই অবস্থান করছেন। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তারা জানান, বছরের পর বছর পদোন্নতি না হওয়ায় তারা সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং কর্মস্পৃহা হারাচ্ছেন। 

শিক্ষা ক্যাডারে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বেতন কাঠামো সম্পর্কিত তথ্যে দেখা যায়, ২৬তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের বেসিক বেতন এখন ৬৩ হাজার ৮১০ টাকা, ২৭তম ব্যাচের ৬০ হাজার ৭৭০ টাকা, ২৮তম ব্যাচের ৫৫ হাজার ১১০ টাকা, ২৯তম ব্যাচের ৫৫ হাজার ১১০ টাকা, ৩০তম ব্যাচের ৫২ হাজার ৪৮০ টাকা এবং ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের বেসিক ৪৯ হাজার ৯৮০ টাকা। অধিকাংশ কর্মকর্তা বেতনস্কেলের ওপরের ধাপগুলিতে অবস্থান করছেন এবং অনেকে সর্বোচ্চ ধাপেও পৌঁছে গেছেন। ফলে তাদের পদোন্নতি দিলে সরকারের অতিরিক্ত কোনো আর্থিক ব্যয় সৃষ্টি হবে না।

আরও পড়ুন: সিসিএন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞতার ভুয়া সনদ দেখিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক

এদিকে সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য ৩২তম বিসিএস পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ৫৫৬টি সুপার নিউমারারি পদ সৃষ্টির ফাইল বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি আত্মীকৃত সরকারি কলেজগুলোতে প্রায় আড়াই হাজার শূন্য পদ রয়েছে, যেখানে পদোন্নতিপ্রাপ্তদের পদায়ন সম্ভব বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত সহকারী অধ্যাপকরা দাবি জানিয়েছেন, দ্রুত পদোন্নতি কার্যকর না হলে তাঁরা কর্মবিরতি কর্মসূচিসহ কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।

এ বিষয়ে সবুজবাগ সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাবিলা নওরীন জয়ীতা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতিবঞ্চিত। আন্দোলন করে সবাই দাবি আদায় করে নিচ্ছে। এজন্য আমরাও আন্দোলনের দিকে এগোচ্ছে। তবে আন্দোলনে যাওয়ার আগে আমরা সরকারকে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেধে দিতে চাই। এ সময়সীমার মধ্যে দাবি মানা না হলে আমরা কর্মবিরতিতে যাব। আজ রবিবার এ বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হবে।’