বিশ্ববিদ্যালয় খোলার উপরে নির্ভর করছে জকসু নির্বাচন
২২ ডিসেম্বর নির্বাচন করতে প্রস্তুত কমিশন
- ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২:২৪
ভূমিকম্প আতঙ্কে আগামী চার ডিসেম্বর পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো ভবন গুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ব্যবহার উপযোগী কিনা এবং এই ভবনগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে কিনা এর ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভবনগুলো শিক্ষা কার্যক্রমের অনুপযোগী হলে নেয়া হতে পারে সংস্কারের উদ্যোগ। আগামী ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে বিশেষজ্ঞদের একটি টিম এই প্রতিবেদন জমা দিবে প্রশাসনের নিকট।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র বলছে কয়েকটি ভবনে ইতোমধ্যে বেশ ক্ষতি হয়েছে। কোন ভবনের সিলিং খসে পড়ছে পর্যবেক্ষণ টিমের রিপোর্ট সাপেক্ষে এসকল ভবন জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হতে পারে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ছুটি বৃদ্ধি পেতে পারে এক মাসের অধিক সময়। সংস্কারকালীন সময়ে চলমান ছুটি বৃদ্ধি করে অনলাইন ক্লাসের দিকেও ঝোকার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে চলমান ছুটির কারনে বিপাকে পড়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের কমিশন। এদিকে নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ার গুঞ্জনে ২২ ডিসেম্বরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে প্যানেলগুলো। সকলের দাবি তফসিল অনুযায়ী ২২ ডিসেম্বরেই নির্বাচন হোক।
শিবির সমর্থিত অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, কোন প্রকার যদি কিন্তু ছাড়াই ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন হতে হবে। ২২ ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন যাওয়া মানেই নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা। এর আগেই নির্বাচন করা সম্ভব ছিলো কিন্তু একটি পক্ষকে বিশেষ সুবিধা দিতেই পিছিয়েছে নির্বাচন। আবারও যদি পেছানো হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের সাথে সরাসরি বেইমানি করা হবে।
ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেলের ভিপি প্রার্থী একেএম রাকিব বলেন, ঘোষিত সময় অনুযায়ী ২২ ডিসেম্বরই ভোট গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচনকে শঙ্কার পরিবেশে ঠেলে দিতে ‘প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ’ দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, আমরা স্পষ্ট করে জানিয়েছি নির্বাচন ঘোষিত তারিখেই হতে হবে। আবারও বলে দিতে চাই, নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করবেন না এবং কোনো রাজনৈতিক দলের তাবেদারি করতে গিয়ে আমাদের অধিকার হননের চেষ্টা করবেন না।
স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী রাকিব বলেন, নির্বাচন কমিশন ডোপ টেস্ট করাবে প্রার্থীদের এখানে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার সাথে কোন সম্পর্ক নেই। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন চাইলেই নির্ধারিত সময়ে ডোপ টেস্ট করাতে পারবে। এছাড়া ডোপ টেস্ট পিছিয়ে দেয়া মানেই নির্বাচন পিছিয়ে দেয়া যা কোনভাবেই কাম্য না। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য পরিশ্রম ও খরচ বাড়বে। সেই সাথে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।
একই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশনও। তবে নির্বাচন কমিশন বলছে ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন হবে কিনা তা নির্ভর করছে ৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় খোলা ও না খোলার সিদ্ধান্তের উপর। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড.মোস্তফা হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলা ও না খোলার উপর নির্ভর করছে তফসিল অনুযায়ী আগামী ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন হবে কি হবে না। এখানে প্রশাসন বলতে, চেয়ারম্যান, ডিনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের পরামর্শেই সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি বলেন, আমরা একটা মিটিং করেছিলাম প্রার্থীদের নিয়ে। মিটিংয়ে প্রার্থীদের একটি গ্রুপ নির্বাচনের তারিখ পেছানোর দাবি জানায়, আরেকটি গ্রুপ ২২ ডিসেম্বরেই নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় দুইটা দল ছাত্রদল ও শিবির এখন ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচন পেছানোর জন্য কোন ঘোষণা দিইনি। কোথাও এধরণের কথা বলিনি। তফসিল অনুযায়ীই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি ২২ ডিসেম্বর নির্বাচনের লক্ষ্যে। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার ফলে পরিস্থিতি বিবেচনায় শুধু মাত্র ডোপটেস্ট পিছানো হয়েছে। যা পরেও করা যাবে।
নির্বাচন কমিশন বলেন, আমরা এখনো পর্যন্ত ২২ তারিখ করতে প্রস্তুত। তবে নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পন্নর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় খোলা প্রয়োজন। এটা বিঘ্নিত হলে নির্বাচন কার্যক্রমও বিঘ্নিত হবে।