নরসিংদীতে মৃত্যু বেড়ে ৪, ডিসি অফিসসহ শতাধিক ভবনে ফাটল

ভূমিকম্পের পর বিপর্যস্ত নরসিংদী
ভূমিকম্পের পর বিপর্যস্ত নরসিংদী © সংগৃহীত

ভূমিকম্পে নরসিংদীতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ জনে। একই সাথে জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ভূমিকম্পের প্রভাবে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ড ও পলাশ ফার্টিলাইজার কারখানার ইউরিয়া উৎপাদন সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও সার্কিট হাউসহ শতাধিক ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন পাঠানো এক প্রেস রিলিজে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ঘোড়াশালে উৎপন্ন হওয়া ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে হুড়োহুড়ি করে উঁচু ভবন থেকে নামতে গিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক লোকজন আহত এবং ৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন জেলা সদরের চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলির হাফেজ ওমর (৮), পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামের কাজেম আলী ভূঁইয়া (৭৫), একই উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের ইসলামপাড়া নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নাসিরউদ্দিন (৬০) ও শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের গাজকিতলা (পূর্বপাড়া) গ্রামের ফোরকান (৪০)।

জানা গেছে, সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলিতে নির্মাণাধীন ভবনের মালামাল নিচে পড়ে ৪ জন আহত হন। এর মধ্যে মারাত্মকভাবে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু হাফেজ ওমরকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বাবা দেলোয়ার হোসেন উজ্জ্বলের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এদিকে পলাশের মালিতা পশ্চিমপাড়ায় মাটির ঘরের নিচে চাপা পড়েন ৭৫ বছরের বৃদ্ধ কাজেম আলী র্ভূঁইয়া। জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। একই উপজেলার ইসলামপাড়া নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নাসিরউদ্দিন ফসলি জমি থেকে আতঙ্কিত হয়ে দৌড়ে আসার পথে রাস্তা থেকে নিচে লাফ দিয়ে পড়ে মারা যান। জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, নিহত হওয়া ফোরকান ভূমিকম্পনকালে কম্পনের ফলে গাছ থেকে পড়ে যান। তাৎক্ষণিক নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে ঢামেকে রেফার করা হয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি রাস্তায় মৃত্যুবরণ করেন।

এ ছাড়া ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসন বলছে, ভূমিকম্পের ফলে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। একই সাথে সাবস্টেশনের বিপুল পরিমাণ প্রডাকশন ট্রান্সফরমার ভূ-কম্পনের ফলে ভেঙে পড়েছে।

একইভাবে ঘোড়াশাল পলাশ ফার্টিলাইজার কারখানার ইউরিয়া উৎপাদন ভূমিকম্পনজনিত কারণে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। ভূ-কম্পনের সময় ইঞ্জিন মেশিনারিজ ভাইব্রেশনের মাধ্যমে বন্ধ হয়ে যায় এবং মেশিনারিজ চেকিং অপারেশনে আছে।