এনটিআরসিএর পাঠানো চিঠি অনুমোদনের জন্য ফাইল তুলল শিক্ষা মন্ত্রণালয়
- ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:৪১
শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এ চিঠি অনুমোদনের জন্য ফাইল তুলেছে মন্ত্রণালয়। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ ফাইল অনুমোদন হতে পারে বলে জানা গেছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একটি সূত্র দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণ হয়েও ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশ না পাওয়া প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশের জন্য শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করতে চায় এনটিআরসিএ। চলতি বছরের জুন অথবা ডিসেম্বর পর্যন্ত পদের তথ্য নিয়ে একটি গণবিজ্ঞপ্তি দিতে চায় সংস্থাটি। এজন্য তারা সম্মতি চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। এ চিঠি অনুমোদনের জন্য ফাইল তোলা হয়েছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এনটিআরসিএর চিঠি আমরা পেয়েছি। এটি অনুমোদনের জন্য ফাইল তোলা হয়েছে। জুন অথবা ডিসেম্বর পর্যন্ত যে কোনো একটি অনুমোদন দেওয়া হবে। ফাইল অনুমোদন হলে বিষয়টি এনটিআরসিএকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
এদিকে ১৮তম নিবন্ধনধারীতের জন্য সংগ্রহ হতে যাওয়া সেই শূন্য পদের ব্যবহার নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনটিআরসিএ ভিন্ন অবস্থানে রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাইছে, মাঠ পর্যায় থেকে যে শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে, তা প্রথমেই ব্যবহৃত হবে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রমে। তাদের মতে, বদলি চালু হলে শিক্ষক সংকট অনেকাংশে কমে যাবে এবং নতুন নিয়োগ বা সুপারিশের চাপও কমবে। এছাড়া নিজ বাড়ি থেকে শত শত কিলোমিটার দূরে চাকরি করা শিক্ষকরাও স্বস্তিতে থাকতে পারবেন।
অপরদিকে এনটিআরসিএ চাইছে, শূন্য পদগুলোকে কাজে লাগিয়ে ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশবঞ্চিত ১৮তম নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ সুপারিশ দেওয়া হোক। কেননা তাদের বয়স সংক্রান্ত কোনো জটিলতা নেই। সেজন্য তাদের নিয়োগ দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের সংখ্যা কমিয়ে ফেলতে চায় সংস্থাটি। শূন্য পদগুলো বদলির জন্য সংরক্ষণ করা হলে ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশবঞ্চিতদের নিয়োগ সুপারিশের সুযোগ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে এনটিআরসিএ।
দুই পক্ষের ভিন্ন মনোভাবের কারণে শূন্য পদের ব্যবহারে জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, বদলি কার্যক্রম ও সুপারিশ—উভয়ই সময়সাপেক্ষ এবং শূন্য পদের সংখ্যা নির্ভুলভাবে না জানা পর্যন্ত কোনো একটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়বে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনটিআরসিএর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস। তবে দুই সংস্থার কেউই এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে চাননি। নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘শিক্ষকদের বদলির জন্য শূন্য পদের চাহিদা নেওয়ার কথা ছিল গত সেপ্টেম্বর মাসে। এমপিও নীতিমালায় বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। নীতিমালা লঙ্ঘন করে বদলি চালু করতে বিলম্ব হলে অনেকেই আদালতে যেতে পারেন। এজন্য যে শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, সেগুলো বদলির জন্য সংরক্ষণ করা উচিত।’
এনটিআরসিএর এক কর্মকর্তা নিজেদের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে অনেকেই সুপারিশবঞ্চিত হয়েছেন। তাদের এখন সুপারিশ করা না গেলে পরবর্তী আর সুপারিশ করা যাবে না। কেননা ১৯তম থেকে নতুন পদ্ধতিতে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এজন্য আমরা চাচ্ছি সুপারিশবঞ্চিতদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রার্থীকে সুপারিশ করতে। এজন্য আমরা ই-রেজিস্ট্রেশন এবং ই-রিকুইজিশনের কার্যক্রম শুরু করেছি। তবে মন্ত্রণালয় বলছে পদগুলো বদলির জন্য সংরক্ষণ করতে। বিষয়টি নিয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করব।’