এইচএসসিতে নতুন করে জিপিএ-৫ পেলেন ৫৫৫ শিক্ষার্থী, ফেল থেকে পাস কতজন

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক অধিদপ্তর
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক অধিদপ্তর © সংগৃহীত

২০২৫ সালের এইচএসসি–আলিম বা সমমানের পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ বা পুনর্মূল্যায়নের ফলে বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘটনা ঘটেছে। গত রবিবার (১৬ নভেম্বর) প্রকাশিত পুনঃনিরীক্ষণের ফলে নতুন করে জিপিএ–৫ পেয়েছেন ৫৫৫ শিক্ষার্থী, আর ফেল থেকে পাস করেছেন ১ হাজার ৪৭৯ জন। সব মিলিয়ে ২ হাজার ৩৩১ শিক্ষার্থীর ফল বিভিন্ন গ্রেডে পরিবর্তিত হয়েছে। এমনকি এক বোর্ডে ফেল করা শিক্ষার্থীর জিপিএ-৫ পাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ১১টি শিক্ষা বোর্ডে সারাদেশ থেকে মোট ২ লাখ ২৬ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। তারা চ্যালেঞ্জ করেছেন মোট ৪ লাখ ২৮ হাজার খাতা।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ২ লাখ ৯২ হাজার ৫৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন ৬৬ হাজার ১৫০ জন। এসব আবেদন থেকে মোট ১ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৬টি বিষয়ের খাতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। পুনর্মূল্যায়নে সর্বোচ্চ ফল পরিবর্তন হয়েছে এই বোর্ডে। এখানে ২ হাজার ৩৩১ শিক্ষার্থীর গ্রেড পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন করে জিপিএ–৫ পেয়েছেন ২০১ জন, আর ফেল থেকে পাস করেছেন ৩০৮ জন।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে মোট ৯৯ হাজার ৫৭৬ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২২ হাজার ৫০৩ জন ৪২ হাজার ৪৪টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেন। পুনর্মূল্যায়নের ফলে ৫৮৭ শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে ২৩ জন নতুন করে জিপিএ–৫ পেয়েছেন এবং ১০৮ জন ফেল থেকে পাস করেছেন। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ১ লাখ ১ হাজার ৮৪৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২২ হাজার ৫৯৫ জন ৪৬ হাজার ১৪৮টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেন। পুনর্মূল্যায়নে এই বোর্ডে ৩৯৩ জন ফেল থেকে পাস করেছেন এবং ৩২ জন নতুন করে জিপিএ–৫ অর্জন করেছেন।

আরও পড়ুন: এইচএসসির পুনঃনিরীক্ষণের ফল আজ, দেখবেন যেভাবে

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ২০ হাজার ৯২৪ শিক্ষার্থীর ৩৬ হাজার ১০২টি খাতা চ্যালেঞ্জের পর ১২১ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জন নতুন জিপিএ–৫ পেয়েছেন এবং ৫৩ জন ফেল থেকে পাস করেছেন। দিনাজপুর বোর্ডে ১৭ হাজার ৩১৮ জনের ২৯ হাজার ২৯৭টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন গ্রহণ করা হয়। এখানে নতুন জিপিএ–৫ পেয়েছেন ৩৪ জন এবং ফেল থেকে পাস করেছেন ৮৫ জন। যশোর বোর্ডে ২০ হাজার ৩৯৫ শিক্ষার্থীর ৩৬ হাজার ২০৫টি বিষয়ে আবেদন জমা হয়। পুনর্মূল্যায়নে ৭২ জন নতুন করে জিপিএ–৫ পেয়েছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, একজন শিক্ষার্থী ফেল থেকে সরাসরি জিপিএ–৫ পেয়েছেন।

ময়মনসিংহ বোর্ডে ১৫ হাজার ৫৯৮ শিক্ষার্থীর ৩০ হাজার ৭৩৬টি খাতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। ফল পরিবর্তনের তালিকায় নতুন জিপিএ–৫ পেয়েছেন ১০৩ জন এবং ফেল থেকে পাস করেছেন ২২৫ জন। সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ১৩ হাজার ৪৪ জন আবেদনকারীর মধ্যে ১৪১ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭ জন নতুন জিপিএ–৫ এবং ৩১ জন ফেল থেকে পাস করেছেন। বরিশাল বোর্ডে আবেদনকারীর সংখ্যা সবচেয়ে কম—৮ হাজার ১১ জন। ১৭ হাজার ৪৮৯টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের পর ১৮৫ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে জিপিএ–৫ পেয়েছেন ১৯ জন, আর ফেল থেকে পাস করেছেন ১৯ জন।

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ৯ হাজার ৭০১ জন শিক্ষার্থী ৩১ হাজার ৮২৮টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেন। পুনর্মূল্যায়নে ২০৪ জনের ফল পরিবর্তন হয়। নতুন জিপিএ–৫ পেয়েছেন ৩৪ জন এবং ফেল থেকে পাস করেছেন ৪৫ জন। আর কারিগরি বোর্ডে মোট ২৪১ জনের ফল পরিবর্তিত হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ জন নতুন করে জিপিএ–৫ অর্জন করেছেন এবং ১৫৮ জন ফেল থেকে পাস করেছেন।

প্রসঙ্গত, এ বছর সারাদেশের ৯ হাজার ১৯৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেন। গত ১৬ অক্টোবর প্রকাশিত ফল অনুযায়ী পাস করেছেন ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন, যা মোট পরীক্ষার্থীর ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ফেল করেছেন ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন (৪১ দশমিক ১৭ শতাংশ)।