মেডিকেল-ডেন্টাল ভর্তিতে যত আবেদন পড়ল
- ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:২৪
দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি আবেদন শুরু হয়েছে গত মঙ্গলবার। আবেদন শুরুর পর আজ শনিবার বিকেল পর্যন্ত ৮৯ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন। আগামী ২১ নভেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করা যাবে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি সূত্র দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য জানিয়েছে। নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত (শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা) ৮৯ হাজার ২০৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করেছেন। প্রথম দিকে আবেদন সংখ্যা বেশি হয়। পরে আবার তা কমে যায়।’
অনলাইনে আবেদনের ফি জমা দেওয়া যাবে ২২ নভেম্বর (শনিবার) রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সকাল ১০টা থেকে ১১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। এবার মেডিকেল ভর্তিতে ৭২২টি আসন কমানো হয়েছে।
আবেদন যোগ্যতা
ভর্তি পরীক্ষায় প্রার্থীদের ২০২৪ অথবা ২০২৫ সালে এইচএসসি/‘এ’ লেভেল/সমমান এবং ২০২২ সালের পর এসএসসি/‘ও’ লেভেল/সমমান পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ হতে হবে। দুই পরীক্ষায় মোট জিপিএ কমপক্ষে ৮.৫০ থাকতে হবে এবং কোনো পরীক্ষায় জিপিএ ৪.০০-এর নিচে হলে আবেদন করা যাবে না।
উপজাতীয় ও পার্বত্য জেলার প্রার্থীদের ক্ষেত্রে মোট জিপিএ ৮.০০ এবং এককভাবে ন্যূনতম ৩.৫০ থাকতে হবে। জীববিজ্ঞানে (Biology) ন্যূনতম গ্রেড পয়েন্ট ৩.৫০ না থাকলে কোনো প্রার্থী আবেদন করতে পারবেন না।
পরীক্ষা পদ্ধতি
এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা একই দিনে এবং একই প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত হবে। ১০০ নম্বরের বহুনির্বাচনী (MCQ) প্রশ্নের মধ্যে থাকবে
জীববিজ্ঞান: ৩০
রসায়ন: ২৫
পদার্থবিজ্ঞান: ১৫
ইংরেজি: ১৫
সাধারণ জ্ঞান, প্রবণতা ও মানবিক গুণাবলী: ১৫
প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা হবে। পরীক্ষার সময়কাল ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট, পাশ নম্বর ৪০।
মেধা তালিকা নির্ধারণ
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএ মিলিয়ে মোট ১০০ নম্বর নির্ধারণ করা হবে—
এসএসসি জিপিএ × ৮ = ৪০
এইচএসসি জিপিএ × ১২ = ৬০
লিখিত পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে এই দুইয়ের যোগফলেই মেধা তালিকা চূড়ান্ত হবে।
২০২৪ সালের পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে মোট নম্বর থেকে ৩ নম্বর এবং গত শিক্ষাবর্ষে কোনো সরকারি মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজে ভর্তি থাকা প্রার্থীর ক্ষেত্রে ৫ নম্বর কর্তন করা হবে।
ভর্তির ফরম পুরনে যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে। এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তির জন্য অনলাইন ফরম পূরণের নিয়মাবলি, ভর্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ওয়েব সাইট www.mefwd.gov.bd, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট www.dgme.gov.bd, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট www.dghs.gov.bd ও টেলিটকের ওয়েবসাইট http://dgme.teletalk.com.bd হতে জানা যাবে।
গুরুত্বপূর্ণ সময়সূচি
অনলাইনে আবেদন শুরু: ১১ নভেম্বর (মঙ্গলবার) সকাল ১০টা
অনলাইনে আবেদন শেষ: ২১ নভেম্বর (শুক্রবার) রাত ১১:৫৯
ফি জমাদানের শেষ সময়: ২২ নভেম্বর (শনিবার) রাত ১১:৫৯
প্রবেশপত্র ডাউনলোড: ৭-৯ ডিসেম্বর (রবিবার-মঙ্গলবার)
হাজিরা সিট ডাউনলোড: ৯-১০ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার-বুধবার)
ভর্তি পরীক্ষা: ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সকাল ১০টা–১১:১৫
বিদেশি সনদধারীদের জন্য
‘ও’ ও ‘এ’ লেভেল পাস শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশে প্রচলিত জিপিএতে রূপান্তর করে Equivalence Certificate সংগ্রহ করতে হবে। এজন্য ২,০০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট/পে-অর্ডারসহ আবেদন জমা দিতে হবে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মেডিকেল এডুকেশন শাখায় (কক্ষ নং ২০৪, পুরাতন ভবন, ২য় তলা, মহাখালী, ঢাকা)—শেষ তারিখ ১৮ নভেম্বর বিকাল ৫টা।
আসন সংখ্যা
দেশের প্রথম সারির পুরনো আটটি মেডিকেল থেকে ২৫টি করে আসন কমানো হয়েছে। ২৫০ থেকে আসন কমে এই ৮ প্রতিষ্ঠানে আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৫-এ। এগুলো হল- ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, সিলেট এমএজি ওসমানী, বরিশাল শের-ই-বাংলা, ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ। এ ছাড়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজেও ২৩০ থেকে ৫ কমিয়ে ২২৫টি আসন নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর বাইরে হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ থেকে ৫০ এবং নেত্রকোনা, নীলফামারি, নওগাঁ, মাগুরা ও চাঁদপুর মেডিকেল থেকে ২৫ করে কমিয়ে ৫০ আসন নির্ধারণ করা হয়েছে। আসন বাড়া তিনটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ, টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ এবং পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ। এর মধ্যে শহীদ তাজউদ্দীন এবং টাঙ্গাইল মেডিকেলে ২৫ করে বাড়িয়ে আসন দাঁড়িয়েছে ১২৫টি। আর পটুয়াখালী মেডিকেলে ২৫ বাড়িয়ে আসন নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০টি।
অন্যান্য মেডিকেলের আসন সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে। এর মধ্যে ২০০ করে আসন রয়েছে কুমিল্লা, খুলনা, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান, ফরিদপুর এবং দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে। ১০০ করে আসন রয়েছে পাবনা, নোয়াখালী, কক্সবাজার, যশোর, সাতক্ষীরা, কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া, জামালপুর এবং মুগদা মেডিকেল কলেজে। অপরদিকে ১২৫টি করে আসন রয়েছে গোপালগঞ্জ এবং মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজে। আর সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে রয়েছে ৭৫টি আসন।