গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ কর্মকর্তাকে স্থায়ী ও সাময়িকভাবে বরখাস্ত
- ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:১৪
দীর্ঘদিন অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা এবং বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) ছয় কর্মকর্তাকে স্থায়ী ও সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ভাইস চ্যান্সেলরের আদেশক্রমে রেজিস্ট্রার ও সহকারী রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষরিত পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
সহকারী রেজিস্ট্রার (রেজিস্ট্রারের দপ্তর, কেন্দ্রীয় ভান্ডার) মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বরাবর জারিকৃত নোটিশে বলা হয়, ‘আপনি গত ০৯/১২/২০২৪ তারিখ থেকে অদ্যাবধি অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মস্থলে অননুমোদিতভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন। আপনাকে ০২ (দুই) বার কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়ার পরও আপনি স্বশরীরে এসে চাকরিতে যোগদান করেননি এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিগত প্রমাণ/তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, আপনি অননুমোদিতভাবে বিদেশে অবস্থান করছেন। সেহেতু শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা, ২০১৮-এর ২(চ) ধারা মোতাবেক আপনাকে পলাতক বলে গণ্য করা হয়েছে। উক্ত আইনের ৪-এর উপধারা ৫(ঘ) অনুযায়ী বিষয়টি শাস্তিযোগ্য হওয়ায় শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশ এবং রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ০৯/১২/২০২৪ তারিখ অর্থাৎ আপনার অননুমোদিত অনুপস্থিতির তারিখ থেকে আপনাকে স্থায়ীভাবে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হলো।’
উপ-রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলামের বরাবর দেওয়া নোটিশে বলা হয়, ‘আপনি গত ১১/১০/২০২৪ তারিখ থেকে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিতে অননুমোদিতভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন। আপনাকে ০২ (দুই) বার কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়ার পরও আপনি স্বশরীরে এসে চাকরিতে যোগদান করেননি। এছাড়া আপনি ফৌজদারি মামলায় (গোপালগঞ্জ জি.আর. ৩৬৮/২৪ নং হত্যা মামলা, আসামি নং ৭৬) এজাহারভুক্ত হওয়ায় শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা, ২০১৮-এর ২(চ) ধারা মোতাবেক আপনাকে পলাতক বলে গণ্য করা হয়েছে। উক্ত আইনের ৪-এর উপধারা ৫(ঘ) অনুযায়ী বিষয়টি শাস্তিযোগ্য হওয়ায়, শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশ এবং রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১১/১০/২০২৪ তারিখ থেকে আপনাকে চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।’
উপ-রেজিস্ট্রার ফারজানা ইসলামের বরাবর নোটিশে বলা হয়, ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লব ও অভ্যুত্থানের সময় আপনার বিরুদ্ধে বিতর্কিত ভূমিকার অভিযোগ থাকায়, পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মস্থলে আপনি মাঝে মাঝে উপস্থিত হলে প্রশাসনিক ও শিক্ষার পরিবেশ অস্থিতিশীল ও বিঘ্নিত হয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আপনার ছুটি ও যোগদানের আবেদন আমলে নেয়নি। এছাড়া আপনি গোপালগঞ্জ জি.আর. ৪৩০/২৪ নং ফৌজদারি মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার হয়েছেন এবং মামলা চলমান থাকায় শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশ ও রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৪/১২/২০২৪ তারিখ থেকে আপনাকে চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।’
উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মিকাইল ইসলামের বরাবর নোটিশে বলা হয়, ‘আপনি গত ১৪/০৩/২০২৫ তারিখ থেকে অদ্যাবধি অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। আপনাকে ০২ (দুই) বার কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়ার পরও আপনি স্বশরীরে এসে চাকরিতে যোগদান করেননি এবং পারিপার্শ্বিক প্রমাণের ভিত্তিতে জানা যায় যে, আপনি অননুমোদিতভাবে বিদেশে অবস্থান করছেন। উক্ত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা, ২০১৮-এর ২(চ) ধারা মোতাবেক আপনাকে পলাতক বলে গণ্য করা হয়েছে। উক্ত আইনের ৪-এর উপধারা ৫(ঘ) অনুযায়ী বিষয়টি শাস্তিযোগ্য বিধায় শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশ এবং রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৪/০৩/২০২৫ তারিখ থেকে আপনাকে স্থায়ীভাবে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হলো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. অভিষেক বিশ্বাসের বরাবর নোটিশে বলা হয়, ‘আপনি গত ১১/০২/২০২৫ তারিখ থেকে অদ্যাবধি অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। আপনাকে ০২ (দুই) বার কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়ার পরও আপনি স্বশরীরে এসে চাকরিতে যোগদান করেননি। সেহেতু শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা, ২০১৮-এর ২(চ) ধারা মোতাবেক আপনাকে পলাতক বলে গণ্য করা হয়েছে। উক্ত আইনের ৪-এর উপধারা ৫(ঘ) অনুযায়ী বিষয়টি শাস্তিযোগ্য বিধায় শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশ এবং রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১১/০২/২০২৫ তারিখ থেকে অর্থাৎ আপনার অননুমোদিত অনুপস্থিতির তারিখ থেকে আপনাকে স্থায়ীভাবে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হলো।’
উপ-পরিচালক তুহিন মাহমুদের বরাবর নোটিশে বলা হয়, ‘আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান থাকায় শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশ এবং রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আপনার এই সাময়িক বরখাস্ত আদেশ বলবৎ থাকবে।’