লক্ষ্মীপুরে ঝুঁকিপূর্ণ বাস চলাচল, বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা

লক্ষ্মীপুর-রায়পুর ও লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কে ফিটনেসবিহীন বাসের দাপট
লক্ষ্মীপুর-রায়পুর ও লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কে ফিটনেসবিহীন বাসের দাপট © টিডিসি

লক্ষ্মীপুর-রায়পুর ও লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কে প্রতিদিন চলছে ফিটনেসবিহীন বাসের দাপট। হেলেদুলে চলা যান, মরিচাধরা বডি, দুর্বল টায়ার, ভাঙা সিট আর অদক্ষ চালক—সব মিলিয়ে প্রতিটি যাত্রাই পরিণত হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ অভিযানে।

গত ২৭ আগস্ট মান্দারির কাছাকাছি এলাকায় আনন্দ পরিবহনের একটি বাসে ঘটে ভয়াবহ ঘটনা। চলন্ত অবস্থায় বাসটির গ্যাস সিলিন্ডার খুলে সড়কে পড়ে যায়। যাত্রীরা আতঙ্কে চিৎকার শুরু করলে চালক হঠাৎ ব্রেক চাপেন। অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। ওই ঘটনার পর থেকে যাত্রীদের মনে ভয় রয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, সড়কগুলোর অবস্থা নাজুক। গর্ত আর ফাটলে ভরা রাস্তায় এসব বাস চলতে গিয়ে প্রায়ই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অদক্ষ চালকদের হটকারী আচরণ। হঠাৎ ব্রেক, ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং—সব মিলিয়ে যাত্রীদের মনে আতঙ্ক কাজ করছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, প্রতিদিনের যাত্রা এখন ভাগ্যের ওপর নির্ভর করছে। সড়ক শুধু চলার পথ নয়, এটি বাড়ি ফেরার নিশ্চয়তা—কিন্তু এখন সেই নিশ্চয়তাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিশচা) লক্ষ্মীপুর জেলা সভাপতি সেলিম উদ্দিন নিজামী বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, ভাঙা রাস্তা আর অদক্ষ চালক—এই তিন বিপদের কারণে মানুষ প্রতিদিন জীবন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে বড় দুর্ঘটনা রোধ করা যাবে না।

বিআরটিএ লক্ষ্মীপুর অফিসের একজন কর্মকর্তা জানান, ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল রোধে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। অদক্ষ চালকের লাইসেন্স নবায়নেও কঠোরতা আনা হচ্ছে।

অন্যদিকে লক্ষ্মীপুর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি ও আনন্দ পরিবহনের মালিক নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, রাস্তার অবস্থা ভালো নয়, তবু যাত্রীদের প্রয়োজনে গাড়িগুলো চলছে। সমস্যাযুক্ত গাড়িগুলো মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যাত্রী চাপ বেশি হলেও গাড়ির সংখ্যা সীমিত। নতুন গাড়ি আনা ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেক মালিক পুরনো গাড়ি দিয়েই যাত্রী পরিবহন করছেন।