টুঙ্গিপাড়ায় অভিভাবক-শিক্ষকের কথাকাটাকাটি, শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

শিক্ষার্থীদের টুঙ্গিপাড়া-গোপালগঞ্জ সড়ক অবরোধ
শিক্ষার্থীদের টুঙ্গিপাড়া-গোপালগঞ্জ সড়ক অবরোধ © টিডিসি

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বিদ্যালয়ের দেয়ালে লেখাকে কেন্দ্র করে অভিভাবক ও শিক্ষকের মধ্যে কথাকাটাকাটির ঘটনা ঘটেছে। এর জের ধরে প্রায় আধা ঘণ্টা টুঙ্গিপাড়া-গোপালগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এ সময় সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে থানার ওসি বোঝানোর পর অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা টুঙ্গিপাড়া সরকারি বিদ্যালয়ের সামনে এ এঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় ও বিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, সোমবার (১১ নভেম্বর) গিমাডাঙ্গা টুঙ্গিপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র তন্ময় মোল্লার বিরুদ্ধে একটি কক্ষের দেয়ালে খারাপ ভাষা লেখার অভিযোগ ওঠে। তখন গণিতের শিক্ষক জাকির হোসেন ছাত্রের ব্যাগটি জব্দ করে প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দেয়। এ ছাড়া খারাপ ভাষা লেখার অপরাধে তন্ময়কে বিদ্যালয় থেকে টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) দেওয়ার কথা বলেন। পরে ছাত্রের মা বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষক জাকির হোসেনকে অনুরোধ করেন টিসি না দেওয়ার জন্য। তখন শিক্ষক জাকির হোসেন ও তন্ময় মোল্লার মায়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। পরে ওই দিন রাতে পাটগাতী বাসস্ট্যান্ডে আবার তন্ময়ের বাবা আলী আকবার মোল্লা ও জাকির হোসেনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এর জের ধরে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় গিমাডাঙ্গা টুঙ্গিপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির কিছু শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে সড়ক অবরোধ অন্য শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রায় আধা ঘন্টা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বোঝানোর পর অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। 

আলী আকবার মোল্লা বলেন, ‘সোমবার রাতে পাটগাতী বাসস্ট্যান্ডে শিক্ষক জাকির হোসেনের সঙ্গে দেখা হলে জানতে চাই ছেলের ব্যাগ আটকে টিসি দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন আর আমার স্ত্রীর সঙ্গে কেন খারাপ ব্যবহার করেছেন! তখন শিক্ষক জাকির হোসেন আমার সঙ্গেও উত্তেজিত হয়ে কথা বলেন। পরে আমাদের দুজনের মাঝে কথাকাটাকাটি হয়। এর জের ধরে উনি উস্কানি দিয়ে মঙ্গলবার ছাত্রদের দিয়ে সড়ক অবরোধ করিয়েছেন ।’ এ ছাড়া শিক্ষক জাকির হোসেনের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় প্রতিহিংসা মূলকভাবে এঘটনা ঘটিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর অভিভাবক যে অভিযোগ করেছেন সেটা ভিত্তিহীন। কারণ ওই ছাত্র দেয়ালে খারাপ ভাষা লেখার সময় একজন শিক্ষক ও অন্য শিক্ষার্থীরা দেখেছে। তখন ক্লাসে গিয়ে তন্ময়কে না পাওয়ায় তার ব্যাগটি প্রধান শিক্ষকের কাছে দিয়েছিলাম। পরে তার অভিভাবক এসে আমাকে হুমকি দিয়েছে। আর শিক্ষার্থীদের সড়কে যেতে আমি বাধা দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা শোনেনি।’

গিমাডাঙ্গা টুঙ্গিপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মনি মোহন বিশ্বাস বলেন, ‘মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাঠে জড়ো হচ্ছিল। তখন আমার সন্দেহ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের হাতজোড় করে অনুরোধ করেছিলাম কোনো কিছু না করতে। কিন্তু তারা অনুরোধ না শুনেই সড়কে চলে যায়। সাথে সাথে ইউএনও ও সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) জানাই। কিন্তু তার আগেই ওসি জাহিদুল ইসলাম এসে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বিদ্যালয়ে ফেরান। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্যার বিদ্যালয়ে এসে দুই পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করে দেন।’

টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের সামনে যাই। তখন শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে বিদ্যালয়ে পাঠানোর পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এবিষয়ে কোন পক্ষ এখনো লিখিত অভিযোগ করেনি।’