উপকূলে বিষাক্ত ধোঁয়ার দাপট, রামগতি-কমলনগরে চলছে ৬১ অবৈধ ইটভাটা

অনুমোদন ছাড়াই দেদারসে চলছে ৬১টি ইটভাটা
অনুমোদন ছাড়াই দেদারসে চলছে ৬১টি ইটভাটা © সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় সরকারি অনুমোদন ছাড়াই দেদারসে চলছে ৬১টি ইটভাটা। শীত শুরুর আগেই ভাটাগুলোর চুলা জ্বলে উঠেছে পুরোদমে। এসব ভাটার ধোঁয়া ও ছাইয়ে দমবন্ধ হয়ে পড়েছে উপকূলীয় জনপদ। নষ্ট হচ্ছে কৃষিজমি, ফসল ও মানুষের স্বাস্থ্যের ভারসাম্য।

ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রামগতিতে ৩৩টি ও কমলনগরে ২৮টি ভাটা দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেন, ইটভাটার ধোঁয়া ও কালো ছাই জমিতে পড়ে মাটির উর্বরতা কমিয়ে দিচ্ছে। পানের বরজ, শাকসবজি ও ধানক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। শিশুসহ বয়স্কদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, কাশি ও এলার্জিজনিত রোগ বেড়েছে উদ্বেগজনকভাবে।

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, “যেসব ইটভাটার অনুমোদন নেই, সেগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। পর্যায়ক্রমে সব বন্ধ করে দেওয়া হবে।”

পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাবু বলেন, “প্রতিবছরই অভিযান চালানোর কথা শোনা যায়, কিন্তু বাস্তবে ভাটাগুলো আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্রশাসনের নীরবতা উপকূলের পরিবেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।”

জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান জানান, “অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপকূলবাসীর অভিযোগ, নদীভাঙন ও লবণাক্ততার পর এখন ইটভাটা তাদের নতুন দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন আকাশে শ্বাস নেওয়াটাই যেন কঠিন হয়ে উঠেছে তাদের জন্য।