ডায়াবেটিস বা স্থূলতায় ভিসা বাতিল হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে
- ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৭
আবারও ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে কঠোর শর্ত আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ডায়াবেটিস, স্থূলতা বা দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আবেদন বাতিল হতে পারে বলে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) এই নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, ভিসা আবেদনকারীর স্বাস্থ্য এখন থেকে আরও গভীরভাবে বিবেচনা করা হবে। কিছু রোগ; যেমন হৃদ্রোগ, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, মেটাবলিক, স্নায়ুবিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা চিকিৎসায় কয়েক লাখ ডলার পর্যন্ত ব্যয় হতে পারে। তাই ভিসা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আবেদনকারী চিকিৎসা ব্যয় বহনের সক্ষমতা রাখেন কিনা, তা যাচাই করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এ ধরনের রোগে আক্রান্ত আবেদনকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘পাবলিক চার্জ’ বা অর্থনৈতিক বোঝা হয়ে উঠতে পারেন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ক্ষয় করতে পারেন। সে কারণে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের আগে এসব বিষয় খতিয়ে দেখতে হবে।
আগে মার্কিন ভিসা প্রক্রিয়ায় সংক্রামক রোগ, টিকাদান ইতিহাস, মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার মতো বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হতো। কিন্তু নতুন নির্দেশনায় এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে আরও কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আবেদনকারীর আজীবন চিকিৎসার খরচ বহনের মতো আর্থিক সামর্থ্য আছে কিনা এবং সরকারি সহায়তা বা দীর্ঘমেয়াদি যত্ন ছাড়াই জীবনযাপন সম্ভব কিনা—সেটি অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে। পাশাপাশি আবেদনকারীর পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যও বিবেচনায় নিতে হবে; যেমন সন্তান বা প্রবীণ অভিভাবকের দীর্ঘস্থায়ী রোগ, অক্ষমতা বা বিশেষ যত্নের প্রয়োজন আছে কিনা।
কোনো নির্ভরশীল সদস্যের (ডিপেনডেন্ট) শারীরিক বা মানসিক সমস্যা আবেদনকারীর কর্মক্ষমতায় প্রভাব ফেলতে পারে কিনা, সেটিও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অলাভজনক আইনি সহায়তা সংস্থা ক্যাথলিক লিগ্যাল ইমিগ্রেশন নেটওয়ার্কের সিনিয়র অ্যাটর্নি চার্লস হুইলার জানিয়েছেন, এই নির্দেশনা সব ধরনের ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও মূলত স্থায়ী বসবাসের (পারমানেন্ট রেসিডেন্সি) আবেদনকারীদের ওপরই তা প্রভাব ফেলবে।
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিবাসন আইনজীবী সোফিয়া জেনোভেস বলেছেন, এই নির্দেশনা ভিসা কর্মকর্তাদের আবেদনকারীর চিকিৎসা ইতিহাসের ভিত্তিতে সম্ভাব্য চিকিৎসা ব্যয় ও যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সক্ষমতা মূল্যায়নে উৎসাহিত করবে—যাতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর কেউ ‘পাবলিক চার্জ’ বা অর্থনৈতিক বোঝা হয়ে না ওঠে।