বালুমহাল দখল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগে আহত ৪

বিএনপি নেতা দুই ভাইয়ের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ
বিএনপি নেতা দুই ভাইয়ের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ © সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বালু মহাল ও স্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাজের দখল নিয়ে বিএনপি নেতা দুই ভাইয়ের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। 

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টা থেকে টানা তিন ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষে অন্তত চারজন আহত হন এবং কয়েকটি ঘরে আগুন দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ ও তার ছোট ভাই পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল জলিলের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বালু মহাল নিয়ন্ত্রণ, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাজ, রাস্তা সংস্কার এবং জুট ব্যবসার দখল নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।

বৃহস্পতিবার রাতে আষাঢ়িয়ারচর এলাকায় ‘বাঘ বাটোয়ারা’ নামে পরিচিত একটি স্থানে এবং স্থানীয় একটি কোম্পানির কাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় উভয় পক্ষ একে অপরের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা, ঘরবাড়ি ভাঙচুর এবং লুটপাট চালায়। সংঘর্ষের মধ্যে চারটি ঘরে আগুন দেওয়া হয় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। আগুন নেভাতে গেলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের ওপরও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।

সোনারগাঁ ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র অফিসার জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘একটি বাড়িতে আগুন নেভানোর সময় আরেকটি বাড়িতে আগুন দেওয়ার খবর পাই। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এক ঘণ্টার চেষ্টায় সব আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।’

আরও পড়ুন: বিএনপির দুপক্ষের উত্তেজনা, সেনা অভিযানে মারামারির সরঞ্জামসহ আটক ৪

সংঘর্ষে অন্তত চারজন আহত হন। আহতদের মধ্যে রানা মিয়া নামে আব্দুল জব্বারের সমর্থক একজন জানান, আগুন দেওয়া চারটি ঘর তাদের পক্ষের লোকজনের।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আব্দুর রউফপন্থিরা কিছু পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সদস্যদের আশ্রয় দিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালান। অপরদিকে জলিলপন্থিদের অভিযোগ, রউফপন্থিরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়ে কয়েকটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করেছেন।

সোনারগাঁ থানার এসআই সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় বিএনপির দুই নেতার সমর্থকরা একে অপরের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন। আগুন নেভাতে গেলে আমাদের ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের ওপরও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।’

সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম জানান, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিএনপির দুই নেতা আব্দুর রউফ ও আব্দুল জলিলকে থানায় আনা হয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে যাতে পুনরায় সংঘর্ষের আশঙ্কা না থাকে।’