দলীয় ঐক্যের প্রশ্নে তারেক রহমানের হৃদয়স্পর্শী বক্তব্য
- ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২১:০৭
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর দলীয় গঠনতন্ত্র অনুসারে ৩ নভেম্বর(২০২৫) স্ট্যান্ডিং কমিটির সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণের পর ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন। ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মনোনয়ন বঞ্চিত কর্মী-সমর্থকগণের রাস্তা অবরোধ, মিছিল শো ডাউনে দলীয় বিভেদ বিশৃঙ্খলার খবর প্রকাশিত হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা, আইন শৃঙ্খলা প্রশাসন বিচার বিভাগ অর্থনৈতিক সামাজিক অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় সকল ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রশ্নে দেশে নির্বাচিত সরকার অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে। নির্বাচন বানচালের বা পিছিয়ে দেবার দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের আভাস জনমনে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হবে কিনা-এ নিয়ে এক ধরনের শঙ্কা ও সংশয় তৈরি হচ্ছে। এ সকল সমস্যা অতিক্রম করে গণতন্ত্রে উত্তরণে নির্বাচন জরুরি ও অপরিহার্য।
নির্বাচিত সরকারের পক্ষেই সংকট তথা উল্লিখিত সমস্যাগুলোর সমাধান সুষ্ঠুভাবে নিষ্পন্ন করা সম্ভব। নিশ্চিতভাবে বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় দল হিসেবে এরই মধ্যে দেশ বিদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। আশা করা হচ্ছে আগামী নির্বাচনে বিএনপি জনগণের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠন করবে। এরকম পরিস্থিতিতে দলীয় ঐক্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্বাচন বিষয়ে সকল আশঙ্কাকে প্রতিহত করে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুসারে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে দেশে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইনশাল্লাহ।
২৭ অক্টোবর(২০২৫) সন্ধ্যা ছিল আমার জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতা। আমি কুষ্টিয়া-২(মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসনের গুলশানস্থ কার্যালয়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলাম। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা কিভাবে নৈর্ব্যক্তিক হয়ে ওঠে এবং দলীয় ঐক্য কতটা জরুরি তার বিশ্লেষণই এই লেখাটির প্রতিপাদ্য।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে। একদিকে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা, অন্যদিকে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে নানামাত্রিক ষড়যন্ত্র এবং ড. ইউনূস সরকার ও বিএনপি বিরোধী শিবিরের মধ্যে তীব্র মেরুকরণ। ঠিক এই ক্রান্তিকালে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দশ সাংগঠনিক বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় শেষে বিএনপি নেতাদের সামনে তুলে ধরলেন এক আবেগঘন বার্তা—যা কেবল রাজনৈতিক নির্দেশনা ছিল না, ছিল দলের ভিত্তি, ত্যাগ এবং ঐক্যের প্রতি গভীর এক মানবিক আবেদন। তাঁর আবেগাপ্লুত বক্তব্য শুনে উপস্থিত মনোনয়নপ্রত্যাশীরা অশ্রুসিক্ত হলেন, যা প্রমাণ করে এই মুহূর্তে তারেক রহমানের নেতৃত্ব কেবল নির্দেশনামূলক নয়, বরং তা দলের তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যন্ত এক গভীর মানসিক সংযোগ স্থাপন করেছে।
তারেক রহমানের বক্তব্যের কেন্দ্রীয় ভিত্তি ছিল তাঁর মা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সীমাহীন ত্যাগ ও আপোষহীনতা। তিনি যেভাবে একজন মা হিসেবে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ত্যাগের চিত্র তুলে ধরেন, তা দলের প্রতিটি কর্মীর হৃদয়ে আবেগ সঞ্চার করেছে। তারেক রহমান বলেন, "আমার মাও মৃত্যুর মুখোমুখি ছিলেন। ইচ্ছে করলে মাকে আমি নিয়ে আসতে পারতাম। কিন্তু মাও তো আসেননি আপনাদেরকে ছেড়ে। ৬ বার তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। মৃত্যুর মুখোমুখি সত্ত্বেও মা আপনাদের ছেড়ে আসেননি। সেই মাকে সামনে রেখে আপনারা এক থাকবেন।" এই উক্তিটি গভীর তাৎপর্য বহন করে। প্রথমত, এটি দেশের গণতন্ত্রের জন্য একজন নেত্রীর সর্বোচ্চ ত্যাগের প্রতিচ্ছবি। খালেদা জিয়া কেবল একজন রাজনৈতিক নেত্রী নন, তিনি বিএনপির কাছে একটি আদর্শ, একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিমূর্তি।
শারীরিক ঝুঁকি সত্ত্বেও দেশের মাটিতে থাকার সিদ্ধান্ত, নেতাকর্মীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার—এগুলো দলের মধ্যে এক গভীর অনুভূতির জন্ম দিয়েছে। দ্বিতীয়ত, তারেক রহমান খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কষ্টের কথা উল্লেখ করেন: "যে মা তার চল্লিশ বছরের বাড়ি হারিয়েছেন। শেখ হাসিনা মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। যে মা তার সন্তানকে হারিয়েছেন। মা বুঝেন সন্তান হারানোর ব্যথা।" এই ব্যক্তিগত ত্যাগগুলোকে তিনি রাজনৈতিক আপোষহীনতার সঙ্গে যুক্ত করেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, "ইচ্ছে করলেই তো মা এ ব্যাপারে আপোস করতে পারতেন। কিন্তু মা কোনো আপসে যাননি। তার লক্ষ্যই ছিল ঐক্যবদ্ধের মধ্য দিয়ে একটি জাতি গঠন করা।"
এই বক্তব্যের মাধ্যমে তারেক রহমান দলের প্রতিটি সদস্যকে মনে করিয়ে দেন যে, তাদের নেত্রী সকল ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে দেশের গণতন্ত্রের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এই ত্যাগই দলের ঐক্যের ভিত্তি। যদি নেত্রী এত কষ্ট স্বীকার করে আপোস না করেন, তবে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কেন সামান্য ব্যক্তিগত স্বার্থে ভেদাভেদ তৈরি করবেন? এই আবেগঘন আবেদনই উপস্থিত নেতাদের চোখে অশ্রু এনেছিল, কারণ তারা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন তাদের সংগ্রাম কতটা গভীর মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
তারেক রহমানের বক্তব্যের সবচেয়ে জোরালো এবং প্রতীকী অংশ ছিল ঐক্যের ডাক। এই ঐক্যকে তিনি কেবল একটি রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে নয়, বরং দল ও দেশ রক্ষার জন্য অপরিহার্য নীতি হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও কার্যকর একটি উপমা ব্যবহার করেন—আদালতে দুই মায়ের সন্তানের অধিকারের দাবি। তিনি বলেন, "এক সন্তানকে নিয়ে দুই মায়ের দাবি ছিল...তখন যিনি আসল মা তিনি বললেন, না। সন্তানকে ভাগ করার দরকার নেই উনাকেই (অন্য আরেক দাবিদার) দিয়ে দেন। কিন্তু যতদিন বেঁচে থাকি আমার সন্তানকে আমি দূর থেকে দেখবো। অর্থাৎ আসল মা-ই তিনি যিনি সন্তানকে ভাগ হতে দেননি।" এই উপমা ব্যবহার করে তারেক রহমান স্পষ্ট বার্তা দেন: "ঠিক এই ভূমিকাটা আমি আপনাদের (মনোনয়নপ্রত্যাশী) কাছ থেকে চাই। প্রার্থীরা যদি সেই ভূমিকা অর্জন করেন তাহলে আপনাদের নেতৃত্বেই এগিয়ে যাবে বিএনপি। একজন প্রার্থীকে সবাই সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করব।" তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন: "জাতীয়তাবাদী দল আপনার সন্তানের মত, সন্তানকে যেমন দ্বিখণ্ডিত বা ত্রিখণ্ডিত করা উচিত নয় তেমনিভাবে দলকে ভাগ করা যাবে না।"
এই উপমাটি তারেক রহমানের নেতৃত্বের দূরদর্শিতা প্রমাণ করে। এটি কেবল মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যেকার বিভেদকে নয়, বরং দলের বৃহত্তর স্বার্থকে সামনে এনেছেন। আসল মা যেমন নিজের দাবি ত্যাগ করে হলেও সন্তানকে অক্ষত দেখতে চান, ঠিক তেমনি একজন প্রকৃত নেতা বা কর্মী ব্যক্তিগত মনোনয়নের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে দলের (সন্তানের) ঐক্য ও বিজয় নিশ্চিত করতে চান। এই মানসিকতা অর্জন করাই তারেক রহমানের প্রধান লক্ষ্য। উপস্থিত নেতারা এই বক্তব্যকে 'অসাধারণ' বলে অভিহিত করেছেন, যা কর্মীদের হৃদয়ে গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। এই মতবিনিময় সভা এবং তারেক রহমানের বক্তব্য কেবল আবেগপ্রবণ মুহূর্ত তৈরি করেনি, বরং কঠিন সময়ে তারেক রহমানের নেতৃত্বের অবদান ও দূরদর্শিতা স্পষ্ট করেছে। তার নেতৃত্ব বিশ্লেষণ করলে নিম্নলিখিত দিকগুলো উঠে আসে:
তারেক রহমান বুঝতে পেরেছেন যে, দীর্ঘ ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামে দলের নেতাকর্মীরা ক্লান্ত, হতাশ এবং অনেকে ব্যক্তিগত স্বার্থে বিচ্যুত হওয়ার পথে। তিনি খালেদা জিয়ার ত্যাগ ও ব্যক্তিগত আবেগ ব্যবহার করে নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা ও মানসিক শক্তি সঞ্চার করতে চেয়েছেন। এটি কেবল রাজনৈতিক কৌশল নয়, এটি দলের মনস্তাত্ত্বিক ভিত্তিকে মজবুত করার এক প্রয়াস। তারেক রহমান কেবল ঐক্যের কথা বলেই ক্ষান্ত হননি, তিনি এর জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। যেমন, তিনি নির্দেশ দিয়েছেন—"মনোনয়ন পাওয়ার পরে কোনো মিছিল, মিষ্টি বিতরণ, ফুল বিতরণ করা যাবে না। এগুলো করলে দলের ঐক্য বিনষ্ট হবে।" এই নির্দেশনাগুলো অত্যন্ত বাস্তবসম্মত এবং কঠিন। কারণ, মনোনয়ন ঘোষণার পর বিজয় মিছিল বা মিষ্টি বিতরণ প্রায়শই পরাজিত প্রার্থীদের মধ্যে দূরত্ব ও ক্ষোভ সৃষ্টি করে। এই ধরনের আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ করে তারেক রহমান দলের ভেতরের বিভাজনকে শুরুতেই দমন করার চেষ্টা করেছেন। তারেক রহমান স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "ভয়াবহ ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে.... মোকাবেলা করতে হলে অবশ্যই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।" এই বক্তব্য দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের সতর্কতা ও সংহতি বোধ তৈরি করেছে। তিনি তাদের সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তারেক রহমান মনোনয়নপ্রত্যাশীদের আশ্বস্ত করেছেন যে, "বিগত বছরগুলোতে দলের সবাই অনেক ত্যাগ শিকার করেছেন, তাদের মূল্যায়ন করবে দল।" এই প্রতিশ্রুতি দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে এনেছে। তিনি বলেছেন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই সবাইকে কাজ করতে হবে, আর এই কাজের ভিত্তি হবে পূর্বের ত্যাগের মূল্যায়ন। এটি 'পুরস্কার ও শাস্তির' একধরনের ভারসাম্যপূর্ণ নীতি, যা নেতৃত্বের জন্য অপরিহার্য। তারেক রহমান দেশের বাইরে থেকেও দলের ভেতরে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ও আবেগিক সংযোগ বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছেন। এটি তার নেতৃত্বের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে এমন আবেগঘন ও কার্যকর সভা পরিচালনা করা প্রমাণ করে যে, ভৌগোলিক দূরত্ব তার নেতৃত্বকে দুর্বল করতে পারেনি। বরং, এটি এক ধরনের 'প্রতীকী উপস্থিতি' তৈরি করেছে, যেখানে নেত্রী (খালেদা জিয়া) ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উভয়েই ত্যাগের প্রতীক হিসেবে দূর থেকে দলকে নিয়ন্ত্রণ করছেন।
২৭ অক্টোবরে (২০২৫) দেওয়া তারেক রহমানের এই পুরো বক্তব্য কেবল নির্বাচনকেন্দ্রিক ছিল না, এর একটি বৃহত্তর আদর্শিক দিকও ছিল। তিনি বলেন, "সবকিছুর মূলেই ছিল এদেশের জনগণ। সবকিছুর মূলেই ছিল একটি গণতন্ত্রিক রাষ্ট্র।" এর মাধ্যমে তিনি দলের মূল আদর্শ, অর্থাৎ গণতন্ত্র এবং জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে আবারও জোর দিয়েছেন। তিনি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মনে করিয়ে দেন যে, তারা "যে দলের জন্য আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর কষ্ট এবং ত্যাগ স্বীকার করেছি। ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।"
বস্তুত তারেক রহমানের আবেগঘন এবং কৌশলগত নেতৃত্বই বর্তমানে বিএনপির মূল চালিকাশক্তি। খালেদা জিয়ার ঐতিহাসিক আত্মত্যাগ এবং 'সন্তান ভাগ না করার' মতো মানবিক উপমা ব্যবহার করে তিনি দলের সর্বোচ্চ স্তর থেকে তৃণমূল পর্যন্ত এক অভূতপূর্ব মানসিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই ঐক্য কেবল আসন্ন নির্বাচনের জন্য একটি প্রস্তুতি নয়, বরং দীর্ঘ ১৭ বছরের সংগ্রাম ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দলের টিকে থাকার প্রধান হাতিয়ার। "দলের ভেতরে ঐক্যই আমাদের বড় শক্তি"—তারেক রহমানের এই কথাগুলোই এখন বিএনপির মন্ত্র।
তাঁর নেতৃত্ব দলের কর্মীদের মধ্যে এক নতুন প্রত্যয় সৃষ্টি করেছে। এই আবেগঘন আহ্বান প্রমাণ করে যে, কঠিন পরিস্থিতিতেও তারেক রহমান কেবল একজন নির্দেশক নন, তিনি একজন নেতা যিনি দলের কর্মীদের ব্যক্তিগত কষ্ট, ত্যাগ এবং আবেগের সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত থাকতে জানেন। এই সম্মিলিত ঐক্য ও নতুন প্রত্যয়ে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে নিজেরা নিজেদের মধ্যে অনৈক্যের পরিবর্তে সুদৃঢ় ঐক্যের বন্ধন তৈরি করবে। অর্থাৎ বিএনপি গণতন্ত্রের পথে তাদের অভিযাত্রা অব্যাহত রাখবে, যেখানে বিএনপি তথা ধানের শীষের বিজয়ই হবে চূড়ান্ত লক্ষ্য। যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তাদের জন্য শুভকামনা এবং যারা মনোনয়ন পাননি তারা দেশের স্বার্থে, দলের স্বার্থে, ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান চেষ্টাকে প্রতিহত করার স্বার্থে একতাবদ্ধভাবে কাজ করবেন। যা তারেক রহমানের প্রত্যাশারই প্রকাশ। মনে রাখতে হবে ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ।’
লেখক: সাবেক অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়