ইবিতে সাজিদকে হেয় প্রতিপন্ন এবং নারী শিক্ষার্থীদের পোশাক নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদ
- ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৩০
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী শহীদ সাজিদ আব্দুল্লাহকে 'কোথাকার কোন মৃত পোলা যাইহোক সে ত চইলাই গ্যাসে,' বলে হেয় প্রতিপন্ন করা, সাজিদ হত্যার বিচার চেয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি, নারী শিক্ষার্থীদের পোশাক নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে শাখা ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সহ বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্তও শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান বলেন, 'তিনি যেভাবে আন্দোলন দমাতে চেষ্টা করেছেন আমি মনে করি তিনি জানেন কে আমাদের ভাই সাজিদ কে হত্যা করেছে। আমি তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানাই। পুলিশ প্রশাসন তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সাজিদের খুনি কে তা বেরিয়ে আসবে।'
অপর নারী শিক্ষার্থী বলেন, আপনারা প্রতি বক্তব্যের শুরুতেই আমাদের সন্তানতুল্য বলে সম্বোধন করেন। বিশ্বাস করেন, আমাদের একজনের বাবা মা ও কোন জিন্স প্যান্ট বলা মেয়েকে ন্যাঙটা মেয়ে বলবে না। আমাদের কারো বাবা মা ই কোন শিক্ষার্থী হত্যা হলে কোথাকার কোন মৃত পোলা বলবে না৷
জারিন তাসনীম পুষ্প বলেন, 'তিনি প্রশ্ন করেছেন আমি কে? আমি উত্তরে বলতে চাই আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আমি কীভাবে প্রশ্ন করেন আমি কে? আপনার বিভাগের ছেলে হত্যা হয় আপনি বলেন কোথাকার কোন মৃত ছেলে! আপনার লজ্জা করে না? আমি আপনাকে প্রশ্ন করতে চাই, আমাকে কেন আমার ভাই হত্যার বিচার চেয়ে মাইক হাতে নিতে হয়েছে। আমাদের কোনো শিক্ষার্থীকে ন্যাংটা মেয়ে বলার অধিকার তিনি রাখেন না। আপনি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এটা বলতে আমারও লজ্জা হয়৷ কার সাহসে আপনি এভাবে মন্তব্য করার সাহস পান তা আমরা জানতে চাই।'
শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন বলেন, 'সাজিদ হত্যার ১০৪ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন কে দৃশ্যমান কিছু করতে দেখছি না। অতি দ্রুত সাজিদ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে আমাদের নারী শিক্ষার্থীরা। এইসব যদি একজন শিক্ষকের বক্তব্য হয় তাহলে আমরা কি শিখবো তার কাছ থেকে। আপনারা আর টালবাহানা করবেন না, দ্রুতই হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করেন।'
বোরহান উদ্দিন বলেন, 'কতটা লজ্জাজনক বিষয় যে যখন একজন শিক্ষকের এরকম অডিও ফাস হয় আবার সেখানেই অনেকে তাকে ডিফেন্স করতে যায়। আজকে আপনি বলতেছেন কোথাকার কোন পোলা! আগামীকাল যদি আমি মারা যাই, তাহলে আমার ক্ষেত্রেও আপনি একই কথাই বলবেন। একজন শিক্ষক হয়ে আপনি কীভাবে একজনকে হাওয়ান বলেন, যেটি নিকৃষ্ট একটি শব্দ। আপনাদের প্রশাসনের কয়েকজনের ভাষা এতটা খারাপ যে তা মুখে উচ্চারণ করা যায় না৷'