১৭৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় 'মেলিসায়' বিপর্যস্ত জ্যামাইকা

ঘূর্ণিঝড় মেলিসা
ঘূর্ণিঝড় মেলিসা © সংগৃহীত

১৭৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘হারিকেন মেলিসা’ জ্যামাইকায় আঘাত হেনেছে। ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার এই ভয়াবহ ঝড়টি মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুরে দক্ষিণাঞ্চলীয় সেন্ট এলিজাবেথ প্যারিশ উপকূলে প্রবেশ করে এবং উত্তর দিকের সেন্ট অ্যান প্যারিশ হয়ে দেশটির ওপর দিয়ে অতিক্রম করছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) জানিয়েছে, ২১শ শতকে জ্যামাইকার ওপর আঘাত হানা এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। স্থানীয় প্রশাসন দেশটিতে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। জরুরি উদ্ধারকর্মীরা নৌকা ও হেলিকপ্টারের সাহায্যে দুর্গত এলাকাগুলোতে ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

মার্কিন ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে, মেলিসা ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার ঝড় হিসেবে ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়ার সঙ্গে তীব্র জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি করছে। এতে উপকূলীয় এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে এবং বহু স্থানে যোগাযোগব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

ঝড়টির তাণ্ডবে ইতোমধ্যেই ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে জ্যামাইকায় তিনজন, হাইতিতে তিনজন এবং ডোমিনিকান রিপাবলিকে একজন। এছাড়া আরও একজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

জ্যামাইকার সরকার জানিয়েছে, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জরুরি সহায়তা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি বিশেষ অনলাইন সহায়তা পোর্টাল খোলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, মেলিসা জ্যামাইকায় ‘বিপর্যয়কর’ বন্যা, ভূমিধস ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনতে পারে। এর ফলে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রেড ক্রস জানিয়েছে, ঝড়ের প্রভাবে ১৫ লাখেরও বেশি মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

এদিকে প্রতিবেশী কিউবাতেও ঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। দেশটিতে বিপদসঙ্কেত জারি করে উপকূলীয় এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, বুধবার ভোর নাগাদ মেলিসা কিউবার ভূমিতে আঘাত হানতে পারে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সাগরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মেলিসা অতিপ্রবল শক্তি অর্জন করেছে, যা কেবল জ্যামাইকার জন্য নয়, পুরো ক্যারিবীয় অঞ্চলের জন্য এক বড় মানবিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত বহন করছে।